সতীদাহ প্রথা হল এক প্রাচীন হিন্দু প্রথা, যেখানে কোনো নারীর স্বামী মারা গেলে সেই মহিলাকে স্বামীর জ্বলন্ত চিতায় জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হত। এই প্রথাটি মধ্যযুগ থেকে উনিশ শতকের প্রথম দিক পর্যন্ত ভারতীয় উপমহাদেশে প্রচলিত ছিল।
সতীদাহ প্রথার উৎপত্তির কারণ নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে নানা মতভেদ রয়েছে। অনেকের মতে, এই প্রথাটি আর্যদের দ্বারা ভারতে আনা হয়েছিল। আবার অনেকের মতে, এই প্রথাটি স্থানীয়ভাবে উদ্ভূত হয়েছিল।
সতীদাহ প্রথাকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন যুক্তি ব্যবহার করা হত। কেউ কেউ মনে করতেন যে, সতীদাহের মাধ্যমে একজন নারী তার স্বামীর প্রতি চূড়ান্ত ভক্তি ও আনুগত্য প্রকাশ করতে পারে। আবার কেউ কেউ মনে করতেন যে, সতীদাহের মাধ্যমে একজন নারী তার পাপ থেকে মুক্তি পেতে পারে।
তবে, সতীদাহ প্রথা ছিল একটি নৃশংস এবং অমানবিক প্রথা। এই প্রথার মাধ্যমে বহু নারীকে জোর করে হত্যা করা হত। সতীদাহ প্রথাকে বন্ধ করার জন্য রাজা রামমোহন রায় এবং অন্যান্য সমাজ সংস্কারকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাদের প্রচেষ্টার ফলে, ১৮২৯ সালে ব্রিটিশ সরকার সতীদাহ প্রথাকে নিষিদ্ধ করে আইন পাশ করে।