বিজ্ঞানের যে শাখা মানুষের উপকারী উদ্ভিদ ও প্রাণীর অবস্থান, উৎপাদন, উন্নয়ন, সংরক্ষণ, বাজারজাতকরণ, ব্যবহার প্রণালী, অর্থনৈতিক উপযোগিতা, প্রক্রিয়াজাতকরণ, সম্প্রসারণ ও সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করে তাকে কৃষিবিজ্ঞান বলে।
Agriculture Science-এর agriculture শব্দটি গ্রিক শব্দ হতে উদ্ভূত – ager (field বা জমি) এবং cultura (cultivation বা চাষ)। অর্থাৎ জমি চাষ করে ফসল উৎপন্ন করবার পদ্ধতিকে কৃষি বলে। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে এই সংজ্ঞার পরিধি আজ বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। কৃষি সম্পর্কে সীমিত ধারণা ক্রমেই সম্প্রসারিত হচ্ছে। তাই আজ শুধু জমি চাষ করলে শস্য-উৎপাদনকেই কৃষিবিজ্ঞান বলে না, শুধু কৃষিতত্ত্বই (Agronomy) কৃষিবিজ্ঞানের অন্তর্ভূক্ত বিষয়বস্তু নয়, পশুপালন (Animal husbandry), পশু চিকিৎসা (Veterinary science), বনবিদ্যা (Forestry), মৎস্যবিদ্যা (Fisheries), হাঁস-মুরগি পালন (Poultry science) প্রভৃতিও কৃষিবিজ্ঞানের অন্তর্ভূক্ত বিষয়।
এককথায়, মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, আশ্রয়, ঔষধ এবং সার্বিক মঙ্গলের জন্য যেসব বিজ্ঞানের প্রয়োজন, সবই প্রায় কৃষিবিজ্ঞানের অন্তর্ভূক্ত। তবে কৃষিবিজ্ঞানের সত্যিকার মূল বিষয় হলো কৃষিতত্ত্ব। এই কৃষিতত্ত্ব বা শস্য উৎপাদন-বিদ্যার পূর্ণাঙ্গ বিকাশের জন্য বিভিন্ন পরিপূরক বা সহায়ক বিদ্যা এর সাথে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত। এসব বিষয়বস্তুর মধ্যে মৃত্তিকাবিদ্যা, কৃষি-রসায়নবিদ্যা, শস্য-উদ্ভিদবিদ্যা, কৃষি-প্রকৌশলবিদ্যা, কৃষি অর্থনীতিবিদ্যা, কৃষি-পরিসংখ্যানবিদ্যা, কীটতত্ত্ব, উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব প্রভৃতি প্রধান। তাই কৃষিতত্ত্ব বা কৃষিবিজ্ঞান কোনটাকেই নিরঙ্কুশ বা বিশুদ্ধ বিজ্ঞানের (Absolute or pure science-এর) পর্যায়ে ফেলা যায় না।