জীববিজ্ঞান : কোষ বিভাজন
জীববিজ্ঞান অধ্যায় - ৩ : কোষ বিভাজন
শিকনফল-
- কোষ বিভাজন এবং তার প্রকারভেদ
- মাইটোসিস
- মিয়োসিস
কোষের কোন অংশে ক্যারিওকাইনেসিস সংঘটিত হয়?
কোষের নিউক্লিয়াসে ক্যারিওকাইনেসিস সংঘটিত হয়।
মিয়োসিসকে হ্রাসমূলক বিভাজন বলে কেন?
মিয়োসিস কোষ বিভাজনের অপত্য কোষে ক্রোমোসোমের সংখ্যা মাতৃকোষের অর্ধেক হয়ে যায় তাই এ ধরনের কোষ বিভাজনকে হ্রাসমূলক বিভাজন বলে।
মিয়োসিস কোথায় ঘটে?
জীবের জনন মাতৃকোষ ও নিম্নশ্রেণির উদ্ভিদের জাইগোটে মিয়োসিস ঘটে।
মানুষের জননকোষে ক্রোমোসোম সংখ্যা কত?
মানুষের জননকোষে ক্রোমোসোম সংখ্যা ২৩টি।
মানুষের ভ্রূণকোষে ক্রোমোসোম সংখ্যা কত?
ভ্রূণকোষে ক্রোমোসোম সংখ্যা ৪৬টি।
মিয়োসিস কোষ বিভাজনের শেষে কয়টি অপত্যকোষ উৎপন্ন হয়?
মিয়োসিস কোষ বিভাজনের শেষে চারটি অপত্যকোষ সৃষ্টি হয়।
মাইটোসিস কোষ বিভাজনের কোন দশায় নিউক্লিয়ার মেমব্রেন অবলুপ্ত হয়?
মাইটোসিস কোষ বিভাজনের মেটাফেজ ধাপে নিউক্লিওলাস এবং নিউক্লিয়ার মেমব্রেন অবলুপ্ত হয়।
সাইটোকাইনেসিস কী?
যে প্রক্রিয়ায় নিউক্লিয়াস বিভাজনের পর কোষের সাইটোপ্লাজম সমান দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দুটি অপত্য কোষ সৃষ্টি করে, তাকে সাইটোকাইনেসিস বলে।
কোন ধাপে ক্রোমোসোমগুলো স্পিন্ডল যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিষুবীয় অঞ্চলে সজ্জিত হয়?
মেটাফেজ পর্যায়ে ক্রোমোসোমগুলো স্পিন্ডল যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিষুবীয় অঞ্চলে সজ্জিত হয়।
দেহকোষের কাজ কী?
বহুকোষী জীবের দেহ গঠনে সাহায করে।
ইকুয়েটর কী?
স্পিন্ডল যন্ত্রের দুই মেরুর মধ্যবর্তী স্থানকে ইকুয়েটর বা বিষুবীয় অঞ্চল বলা হয়।
কোষ প্লেট কাকে বলে?
টেলোফেজের শেষে বিষুবীয় তলে এন্ডোপ্লাজমিক জালিকার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ জমা হয়ে যে প্লেট গঠন করে তাকে কোষ প্লেট বলে।
ডিপ্লয়েড ও হ্যাপ্লয়েড বলতে কী বোঝ?
দেহকোষের ক্রোমোসোম সংখ্যাকে ডিপ্লয়েড বা 2n অবস্থাকে ডিপ্লয়েড বলে। ডিপ্লয়েড অবস্থায় ক্রোমোসোমগুলো জোড়ায় জোড়ায় অবস্থান করে।
জীবের দেহকোষের তুলনায় জননকোষে অর্ধেক সংখ্যক ক্রোমোসোম থাকে। ক্রোমোসোমের এ অবস্থাকে হ্যাপ্লয়েড বলে। একে n দিয়ে বুঝানো হয়।
মিয়োসিসের দুটি গুরুত্ব লেখ।
মিয়োসিসের গুরুত্বঃ
i) মিয়োসিস কোষ বিভাজনের দ্বারা বংশগতির ধারা অব্যাহত থাকে।
ii) ক্রোমোসোমের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বংশানুক্রমে প্রতিটি প্রজাতির স্বকীয়তা রক্ষা করে।
জীবে মিয়োসিস কোষ বিভাজন ঘটে কেন?
যৌন জননে পুং ও স্ত্রীজনন কোষের মিলন ঘটে। যদি জনন কোষগুলোর ক্রোমোসোম সংখ্যা দেহকোষের সমান থেকে যায় তাহলে ভ্রূণ বা জাইগোট কোষে জীবটির দেহকোষের ক্রেমোজোম সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। কিন্তু মিয়োসিস কোষ বিভাজনে জননকোষের ক্রোমোসোম সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোসোম সংখ্যার অর্ধেক হয়ে যায়। ফলে ভ্রূণ বা জাইগোটে ক্রোমোসোম সংখ্যা প্রজাতির ক্রোমোসোম সংখ্যার সমান থাকে। ফলে নির্দিষ্ট প্রজাতির ক্রোমোসোম সংখ্যার ধ্র“বতা বজায় থাকে।
উদ্ভিদের বর্ধনশীল কাণ্ড ও মূলের অগ্রভাগে এবং প্রাণীদের শুক্রাণু মাতৃকোষে কী ধরনের কোষ বিভাজন হয়?
উদ্ভিদের বর্ধনশীল কাণ্ড ও মূলের অগ্রভাগে মাইটোসিস কোষ বিভাজন হয় এবং প্রাণীদের শুক্রাণু মাতৃকোষে মিয়োসিস কোষ বিভাজন হয়।
তিন প্রকার কোষ বিভাজনের নাম লেখ এবং প্রত্যেকটি কোথায় ঘটে উলেখ কর।
অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন দ্বারা ব্যাকটেরিয়া, ঈস্ট ইত্যাদি এক কোষী জীব কোষসংখ্যার বৃদ্ধি ঘটায়। মাইটোসিস কোষ বিভাজনÑ উদ্ভিদ ও প্রাণীর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের এবং ভ্রƒণের বৃদ্ধি ঘটায়। মিয়োসিস কোষ বিভাজনÑ উদ্ভিদ ও প্রাণীর যৌন জননের জন্য পুং ও স্ত্রীগ্যামেট উৎপন্ন করে।
প্রোফেজ পর্যায়টির দুইটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।
প্রোফেজ পর্যায়ের দুইটি বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ-
i) কোষ বিভাজনের এ পর্যায়ে কোষের নিউক্লিয়াস আকারে বড় হয়।
ii) ক্রোমোসোমগুলো থেকে পানি হ্রাস পেতে থাকে। ফলে ক্রোমোসোমগুলো ক্রমান্বয়ে সংকুচিত হয়ে মোটা ও খাটো হতে শুরু করে।
ক্রোমোসোমের প্রকৃতি কয় প্রকার ও কী কী?
ক্রোমোসোম ৪ প্রকার। যথা-
i) মেটাসেন্ট্রিক, V আকৃতির।
ii) সাব মেটাসেন্ট্রিক, L আকৃতির।
iii) অ্যাক্রোসেন্ট্রিক; J আকৃতির।
iv) টেলোসেন্ট্রিক; I আকৃতির।
মটর গাছ ও মানুষের মিয়োসিস কোথায় ঘটে?
মটর গাছে মিয়োসিস ঘটে-পরাগধানীর রেণু মাতৃকোষে এবং ডিম্বকের স্ত্রী রেণু মাতৃকোষে। মানুষের মিয়োসিস ঘটে শুক্রাশয়ের শুক্রাণু মাতৃকোষে এবং স্ত্রীলোকের ডিম্বাশ্বয়ের ডিম্বাণু মাতৃকোষে।
অ্যানাফেজ পর্যায়ের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।
অ্যানাফেজ পর্যায়ের দুটি বৈশিষ্ট্য হলো :
i) এ পর্যায়ে অপত্য ক্রোমোসোমগুলোর মধ্যে বিকর্ষণ বৃদ্ধি পায়, ফলে এরা বিষুবীয় অঞ্চল থেকে পরস্পর বিপরীত মেরুর দিকে অগ্রসর হতে থাকে।
ii) এ পর্যায়ের শেষের দিকে ক্রোমোসোমের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পেতে থাকে।
মেটাফেজ ধাপের বৈশিষ্ট্যগুলো লেখ।
মেটাফেজ ধাপে সব ক্রোমোসোম স্পিন্ডল যন্ত্রের বিষুবীয় অঞ্চলে অবস্থান করে। প্রতিটি ক্রোমোসোমের সেন্ট্রোমিয়ার বিষুবীয় অঞ্চলে এবং বাহু দুটি মেরুমুখী হয়ে অবস্থান করে। এ ধাপে ক্রোমোসোমগুলো সবচেয়ে মোটা ও খাটো হয়। প্রতিটি ক্রোমোসোমের ক্রোমাটিড দুটির আকর্ষণ কমে যায় এবং বিকর্ষণ শুরু হয়। এ পর্যায়ের শেষ দিকে সেন্ট্রোমিয়ারের বিভাজন শুরু হয়। এ ধাপে নিউক্লিয়ার মেমব্রেন ও নিউক্লিয়াস সম্পূর্ণ বিলুপ্তি ঘটে।
দেহ কোষ ও জনন কোষের পার্থক্যগুলো কী কী?
দেহ কোষ মাইটোসিস এবং অ্যামাইটোসিস বিভাজনের মাধ্যমে জীবের দেহ গঠনে অংশগ্রহণ করে।
অপরদিকে, জনন কোষ জীবের যৌন জননে অংশগ্রহণ করে। মিয়োসিস বিভাজনের মাধ্যমে জনন মাতৃকোষ থেকে এসব কোষ সৃষ্টি হয়।
একটি উদ্ভিদমূলের কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা কর।
উদ্ভিদমূলের কোষগুলো দেহকোষ। তাই মূলের কোষগুলো মাইটোসিস পদ্ধতিতে পাঁচটি ধারাবাহিক ধাপে বিভাজিত হয়।
এ বিভাজন প্রক্রিয়ায় মাতৃকোষটি বিভক্ত হয়ে দুটি অপত্য কোষ সৃষ্টি করে। এ বিভাজন প্রক্রিয়ায় প্রথমে ক্যারিওকাইনেসিস অর্থাৎ নিউক্লিয়াসের বিভাজন ঘটে এবং পরে সাইটোকাইনেসিস অর্থাৎ সাইটোপ্লাজমের বিভাজন ঘটে।
অ্যামাইটোসিস বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা কর।
কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় কোষ একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় বিভক্ত হয়। প্রথমে নিউক্লিয়াস বিভক্ত হয়, পরবর্তীতে সাইটোপ্লাজম বিভক্ত হয়। কিন্তু যখন কোনো কোষ তার নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজমের সরাসরি বিভাজনের মাধ্যমে দুটি অপত্যকোষ সৃষ্টি করে তখন তাকে অ্যামাইটোসিস পদ্ধতি বলে। যেমন : ঈস্ট কোষের বিভাজন।
অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন বলতে কী বোঝায়?
মাইটোসিস কোষ বিভাজনের প্রক্রিয়ায় একটি থেকে দুটি, দুটি থেকে চারটি এভাবে কোষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। প্রক্রিয়াটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার দ্বারা সম্পন্ন হয়। কোনো কারণে প্রক্রিয়াটির ধারাবাহিক নিয়ন্ত্রণ নষ্ট হয়ে গেলে কোষ বিভাজন বিরামহীনভাবে চলতে থাকে। একে অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন বলে।
লাইসোসোমকে ‘সুইসাইডাল স্কোয়াড’ বলা হয় কেন?
লাইসোজোম অটোফ্যাগি প্রক্রিয়ায় কোষের কোনো ক্ষতি হলে বা খাদ্যাভাব দেখা দিলে কোষস্থ উপাদান ও কোষ অঙ্গাণুগুলোকে বিগলিত করে ধ্বংস করে দেয়। তাই লাইসোসোমকে ‘সুইসাইডাল স্কোয়ার্ড বলা হয়।
জীব প্রযুক্তি জীববিজ্ঞানের ফলিত শাখা-বুঝিয়ে লেখ।
জীব প্রযুক্তি জীববিজ্ঞানের ফলিত শাখা কারণ, এ শাখায় জীব সংশ্লিষ্ট প্রায়োগিক বিষয়সমূহ নিয়ে আলোচনা করা হয়। জীব প্রযুক্তি মানুষের স্বাস্থ্য উন্নয়ন, উন্নততর ফসল সৃষ্টিতে, ফসলের মান ও পরিমাণ বৃদ্ধিতে, পরিবেশ সংরক্ষণে ব্যাপক সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। এজন্য জীব প্রযুক্তি জীব বিজ্ঞানের একটি ফলিত শাখা।
মেটাফেজ ধাপের বৈশিষ্ট্যগুলো লেখ।
মেটাফেজ ধাপে সব ক্রোমোসোম স্পিন্ডল যন্ত্রের বিষুবীয় অঞ্চলে অবস্থান করে। প্রতিটি ক্রোমোসোমের সেন্ট্রোমিয়ার বিষুবীয় অঞ্চলে এবং বাহু দুটি মেরুমুখী হয়ে অবস্থান করে। এ ধাপে ক্রোমোসোমগুলো সবচেয়ে মোটা ও খাটো হয়। প্রতিটি ক্রোমোসোমের ক্রোমাটিড দুটির আকর্ষণ কমে যায় এবং বিকর্ষণ শুরু হয়। এ ধাপে নিউক্লিয়ার মেমব্রেন ও নিউক্লিওলাসের সম্পূর্ণ বিলুপ্তি ঘটে।
প্রশ্নব্যাংক
- কোষ বিভাজন কি?
- জীবদেহে কত ধরনের কোষ বিভাজন দেখা যায়?
- অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে?
- অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন চিত্রসহ বর্ণনা কর।
- জীবজগতে অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজনের ভূমিকা আলোচনা কর।
- মাইটোসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে?
- মাতৃকোষ কি?
- অপত্য কোষ কি?
- ক্যারিওকাইনেসিস কি?
- সাইটোকাইনেসিস কি?
- ইন্টারফেজ পর্যায় কি?
- মাইটোসিস পর্যায়সমূহের নাম লিখ।
- মাইটোসিসের পর্যায়গুলো চিহ্নিত চিত্রসহ বর্ণনা কর।
- অ্যাস্টার রে কি?
- মাইটোসিস পর্যায়ের যে ধাপে অ্যাস্টার রে উৎপন্ন হয় সে ধাপের চিত্রসহ বিবরণ দাও।
- মাইটোসিস পর্যায়ের যে ধাপে ক্রোমোজোমের সেন্ট্রোমিয়ার বিষুবীয় অঞ্চলে এবং বাহু দুটি মেরুমুখী হয়ে অবস্থান করে সে ধাপের চিত্রসহ বিবরণ দাও।
- জীবজগতে মাইটোসিসের গুরুত্ব আলোচনা কর।
- মাইটোসিস কোষ বিভাজনের মেটাফেজ ও টেলোফেজ ধাপদ্বয়ের তুলনামূলক আলোচনা কর।
- মিয়োসিস বলতে কি বুঝ?
- হ্রাসমূলক বিভাজন কি? বুঝিয়ে লিখ।
- মিয়োসিসকে হ্রাসমূলক বিভাজন বলা হয় কেন?
- চিহ্নিত চিত্রসহ হ্রাসমূলক বিভাজন ব্যাখ্যা কর।
- হ্যাপ্লয়েড কি?
- ডিপ্লয়েড কি?
- জীবজগতে মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব লিখ।
- জীবজগতে মাইটোসিস ও মিয়োসিসের তুলনামূলক গুরুত্ব বিবেচনা কর।
- জীবজগতে ক্রোমোজমের সংখ্যা সমান রাখতে মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।
- মিয়োসিস কোষ বিভাজন হয় বলেই প্রতিটি প্রজাতির বৈশিষ্ট্য বংশপরম্পরায় টিকে থাকতে পারে - বুঝিয়ে লিখ।
এসএসসি জীববিজ্ঞান
অধ্যায় - ০২ : জীব কোষ ও টিস্যু
অধ্যায় - ০৫ : খাদ্য, পুষ্টি এবং পরিপাক
অধ্যায় - ০৯ : দৃঢ়তা প্রদান ও চলন
Comments
Post a Comment