বায়োলজিক্যাল ক্লক বা দেহঘড়ি হল আমাদের শরীরের একটি অভ্যন্তরীণ সিস্টেম যা আমাদের শরীরের নানা কাজকে একটি নির্দিষ্ট প্যাটার্নে চালাতে সাহায্য করে। এই প্যাটার্নকে আমরা সার্কেডিয়ান রিদম বলে থাকি। সার্কেডিয়ান মানে প্রায় ২৪ ঘন্টা।
কীভাবে কাজ করে?
আমাদের মস্তিষ্কে একটি অংশ আছে, যাকে সুপ্রাকিয়াসমাটিক নিউক্লিয়াস বলা হয়। এই অংশটিকে আমরা মাস্টার ক্লক বলেও চিনি। এই মাস্টার ক্লকটি পৃথিবীর আলো-আঁধারের চক্রের সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের শরীরকে নির্দেশ দেয় কখন ঘুমাতে হবে, কখন জেগে উঠতে হবে, কখন খাওয়া দাওয়া করতে হবে ইত্যাদি।
বায়োলজিক্যাল ক্লক কেন গুরুত্বপূর্ণ?
- ঘুমের চক্র নিয়ন্ত্রণ: বায়োলজিক্যাল ক্লক আমাদের ঘুমের চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করে। যখন রাত হয়, তখন মস্তিষ্ক মেলানিন নামক একটি হরমোন নিঃসরণ করে যা আমাদের ঘুম আসতে সাহায্য করে।
- হরমোন নিঃসরণ: বায়োলজিক্যাল ক্লক অন্যান্য হরমোনের নিঃসরণকেও নিয়ন্ত্রণ করে যেমন, কর্টিসোল, যা আমাদের শরীরে শক্তি জোগায়।
- শারীরিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ: আমাদের শরীরের তাপমাত্রাও বায়োলজিক্যাল ক্লক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
- মেটাবলিজম নিয়ন্ত্রণ: খাবার হজম, শক্তি ব্যবহার ইত্যাদি প্রক্রিয়াগুলিকে বায়োলজিক্যাল ক্লক নিয়ন্ত্রণ করে।
বায়োলজিক্যাল ক্লকের সাথে খাপ খাইয়ে চলা কেন জরুরী?
যখন আমরা বায়োলজিক্যাল ক্লকের বিরুদ্ধে যাই, তখন আমাদের শরীর বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। যেমন, অবসাদ, উদ্বেগ, ঘুমের সমস্যা, হজমের সমস্যা, ওজন বৃদ্ধি ইত্যাদি।
কিভাবে বায়োলজিক্যাল ক্লককে সুস্থ রাখবেন?
- নিয়মিত ঘুম: প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান এবং উঠুন।
- প্রাকৃতিক আলো: সকালে সূর্যের আলোতে কিছুক্ষণ থাকুন।
- কৃত্রিম আলো: রাতে কম কৃত্রিম আলোতে থাকুন।
- নিয়মিত খাবার: প্রতিদিন একই সময়ে খাবার খান।
- শারীরিক পরিশ্রম: নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
- তनाव মুক্ত থাকুন: ধ্যান বা যোগাসান করুন।
সারসংক্ষেপে
বায়োলজিক্যাল ক্লক আমাদের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই ক্লককে সুস্থ রাখলে আমরা সুস্থ ও সুখী জীবন যাপন করতে পারব।