প্রতিবর্তী ক্রিয়া হল আমাদের শরীরের একটি স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া, যেখানে কোনো উদ্দীপনার জবাবে আমরা সচেতনভাবে চিন্তা না করেই তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দিই। এই প্রক্রিয়াটি সাধারণত মস্তিষ্কের অংশগ্রহণ ছাড়াই সুষুম্নাকাণ্ড দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হয়।
উদাহরণ:
- আঙ্গুলে সুচ ফুটলে হাত সরিয়ে নেওয়া: এটি একটি সাধারণ প্রতিবর্তী ক্রিয়া। আঙ্গুলে সুচ লাগার সাথে সাথে আমরা সচেতনভাবে চিন্তা না করেই হাত সরিয়ে নিই।
- গরম কিছু ছোঁয়া মাত্র হাত সরিয়ে নেওয়া: এই ক্ষেত্রেও আমরা স্বাভাবিকভাবে হাত সরিয়ে নেই।
- কোনো কিছু আমাদের চোখের দিকে আসলে পলক ফোটানো: এটিও একটি প্রতিবর্তী ক্রিয়া।
প্রতিবর্তী ক্রিয়ার গুরুত্ব:
- সুরক্ষা: প্রতিবর্তী ক্রিয়া আমাদের শরীরকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করে।
- দ্রুত প্রতিক্রিয়া: এই ক্রিয়াগুলি খুব দ্রুত হয়, যা অনেক ক্ষেত্রে আমাদের জীবন বাঁচাতে পারে।
- স্বাভাবিক শারীরিক কার্যক্রম: অনেক শারীরিক কার্যক্রম, যেমন হজম, শ্বাস-প্রশ্বাস ইত্যাদি, প্রতিবর্তী ক্রিয়ার মাধ্যমেই হয়।
প্রতিবর্তী ক্রিয়ার প্রক্রিয়া:
- উদ্দীপনা গ্রহণ: কোনো সংবেদী অঙ্গ (যেমন ত্বক) কোনো উদ্দীপনা (যেমন ব্যথা, তাপ) গ্রহণ করে।
- সংবেদী স্নায়ু: এই উদ্দীপনা সংবেদী স্নায়ুর মাধ্যমে সুষুম্নাকাণ্ডে পৌঁছায়।
- সুষুম্নাকাণ্ড: সুষুম্নাকাণ্ডে এই উদ্দীপনা বিশ্লেষিত হয় এবং একটি সংকেত মোটর স্নায়ুতে পাঠানো হয়।
- মোটর স্নায়ু: মোটর স্নায়ু এই সংকেত পেশিতে নিয়ে যায়।
- পেশির সংকোচন: পেশি সংকোচিত হয়ে একটি প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে (যেমন হাত সরিয়ে নেওয়া)।
সারসংক্ষেপ:
প্রতিবর্তী ক্রিয়া হল আমাদের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া, যা আমাদের সুরক্ষা এবং দৈনন্দিন জীবনে সাহায্য করে। এই ক্রিয়াগুলি সাধারণত আমাদের ইচ্ছার বাইরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয়।