সাক্ষাৎকার কাকে বলে? সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীর দক্ষতা ও প্রয়োজনীয়তা

সাক্ষাৎকার কাকে বলে?

কোন মৌলিক বিষয়ে বিজ্ঞানসম্মত ও নির্ভরযোগ্য ধারণা লাভের উদ্দেশ্যেই সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। বই-পুস্তুক ও তথ্যবিবরণীতে প্রাপ্ত তথ্যের সত্যতা যাচাই করার উদ্দেশ্যে ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মতামত সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়। যে কোন বিষয়ের আওতায় কোন তথ্য বা তত্ত্ব যাচাই করতে হলে সাক্ষাৎকার গ্রহণ করতে হয়। সুতরাং বলা যায় যে, কোন বিষয়ে নির্ভরযোগ্য ধারণা লাভের উদ্দেশ্যে সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়ে থাকে। সাধারণভাবে সাক্ষাৎকার বলতে দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মধ্যে অনুষ্ঠিত কথোপকথনকে বোঝায়। নির্ধারিত বা অনির্ধারিত কোন প্রসঙ্গে দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মধ্যে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক আলাপ, আলোচনা, মত বিনিময়, তথ্য আদান প্রদান করাই মূলত সাক্ষাৎকার।

An interview is a conversation between two or more people (The interviewer and the interviewee) where questions are asked by the interviewer to obtain information from the interviewee. Interviews can be divided into two rough types, interviews of assessment and interviews for information.
(www.en.wikipedia.org/wike/Interview).

সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গে বলা যায় যে, ব্যক্তির সাথে সামনাসামনি মিলিত হয়ে কোন ঘটনা, বিষয়বস্তু বা সমস্যা সম্পর্কে ঐ ব্যক্তির নিকট থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করার পদ্ধতিকেই সাক্ষাৎকার বলে। সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে এক বা একাধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত একটি দলের সাথে অন্য দলের কথোপকথন হয়ে থাকে।

সাক্ষাৎকার

সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীর দক্ষতা

শিখন-শিক্ষণের ক্ষেত্রে সাক্ষাৎকার পদ্ধতি প্রয়োগ করা বেশ জটিল। তবে এই পদ্ধতি কার্যকরভাবে প্রয়োগ করতে হলে সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীকে দক্ষ হতে হবে। সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীকে সাক্ষাৎকার গ্রহণের আগেই প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে হয়। সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীকে যে সব দক্ষতার অধিকারী হতে হবে তা নিম্নরূপ-

  • সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীর সাক্ষাৎকার গ্রহণের উদ্দেশ্য সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা থাকতে হবে।
  • যে বিষয়ে বা প্রসঙ্গে সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হবে তা পরিষ্কারভাবে নির্ধারণ করতে হবে।
  • সাক্ষাৎকার প্রদানকারী সম্পর্কে সম্ভাব্য প্রাসঙ্গিক তথ্যাদি আগেই সংগ্রহ করতে হবে।
  • সাক্ষাৎকারে ব্যবহৃত প্রশ্নাবলি স্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট হতে হবে।
  • সাক্ষাৎকার গ্রহণকালে সাক্ষাৎকার প্রদানকারীর ধর্মীয় বিশ্বাস ও ধারণাকে আঘাত করে এমন কোন প্রশ্ন করা উচিত হবে না।
  • সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীকে মনোবিজ্ঞানসম্মত জ্ঞানের অধিকারী হতে হবে।
  • সাক্ষাৎকার প্রদানকারীকে পুনরাবৃত্তি ও অনুধাবনের সুযোগ প্রদানের জন্য মাঝে মাঝে অল্প সময়ের জন্য আলোচনা স্থগিত রাখতে হবে।
  • সাক্ষাৎকার প্রদানকারীকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য সাক্ষাৎকারে প্রাপ্ত তথ্যের গোপনীয়তা বজায় রাখার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।
  • আলোচনা প্রসঙ্গ নির্দিষ্ট বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
  • সাক্ষাৎকার গ্রহণ শেষ হলে সাক্ষাৎকার প্রদানকারীকে ধন্যবাদ দিতে হবে।

সাক্ষাৎকারের প্রয়োজনীয়তা

অনেক সময় কোন ঘটনা বা বিষয়বস্তু সম্পর্কে ব্যক্তিগতভাবে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করার প্রয়োজন দেখা দেয়। আর এসব জিজ্ঞাসাবাদ, মত বিনিময় হলো সাক্ষাৎকার। শিখন-শেখানো কৌশলে সাক্ষাৎকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে পৃথিবীর অনেক দেশের মত বাংলাদেশেও সাক্ষাৎকার প্রয়োগ হয়ে আসছে। এ দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা অত্যন্ত সহজ হয়। কাজেই শিখন-শিক্ষণের ক্ষেত্রে সাক্ষাৎকার অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে ব্যক্তির অন্তর্দৃষ্টি সৃষ্টি হতে পারে। একবার এই অন্তর্দৃষ্টি সৃষ্টি হয়ে গেলে ব্যক্তি নিজেই নিজেকে ও তার সমস্যাকে বুঝতে পারে। ফলে সমস্যা সমাধানের পথ সহজ ও নিয়ন্ত্রণাধীন হয়ে ওঠে। কাজেই শিক্ষার্থীর শিখনের সমস্যা সনাক্ত করে সেগুলো নিরসন করার কাজে সাক্ষাৎকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

error: Content is protected !!