গীতার কর্মযোগ হলো নিষ্কাম কর্মের পথ, যেখানে ফলাফলের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করে কর্তব্য পালনের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই যোগে, মানুষ তার নির্ধারিত কর্ম (স্বধর্ম) ঈশ্বরের প্রতি নিবেদনস্বরূপ করে এবং attachment বা আসক্তি ব্যতিরেকে তা সম্পাদন করে। কর্মের ফলাফল ঈশ্বরের হাতে সমর্পিত, তাই কর্মীর মনে কোনো প্রকার উদ্বেগ বা অস্থিরতা থাকে না। কর্মযোগ জ্ঞানযোগ ও ভক্তিযোগের সাথে সমন্বিত, যা আত্ম-উপলব্ধি ও মোক্ষ লাভের একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়।
কর্মযোগের মূল নীতি হলো “কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন” – অর্থাৎ, তোমার কর্মেই অধিকার, ফলের দিকে নয়। এর অর্থ এই নয় যে কর্মের কোনো ফল নেই, বরং কর্মের ফলাফলের প্রতি আমাদের আসক্তি বা নিয়ন্ত্রণ নেই। আমাদের কর্তব্য হলো সততা ও নিষ্ঠার সাথে নিজেদের কর্ম করে যাওয়া, এবং ফলাফল যাই হোক না কেন, তা প্রসন্ন চিত্তে গ্রহণ করা। এই মানসিকতাই মানুষকে কর্মের বন্ধন থেকে মুক্তি দিতে পারে এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির পথে চালিত করতে পারে।