রাসায়নিক পরিবর্তন | HSC রসায়ন প্রথম পত্র Notes

গ্রিন কেমিস্ট্রি

কম পরিবেশ দূষণ করে ও সর্বনিম্ন পরিমাণে বর্জ্য উৎপন্ন হয় এমন সব প্রক্রিয়া ও উৎপাদন পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করা। নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব উৎপাদ উৎপাদনের পদ্ধতিকে অনুসরণ করা, যেসব পদ্ধতির মাধ্যমে সর্বোচ্চ পরিমাণ উৎপাদ উৎপন্ন হয় এবং কোনো বর্জ্য যে উৎপন্ন না হয়।

একমুখী বিক্রিয়া

যেসব বিক্রিয়ায় একদিকের গতিবেগ অন্যদিকের গতিবেগের তুলনায় এতো কম যে তা হিসেবেই ধরা হয় না, সেসব বিক্রিয়াগুলোকে একমুখী বিক্রিয়া হিসেবে ধরা হয়ে থাকে।

উভমুখী বিক্রিয়া

কোনো বিক্রিয়া একটি বিশেষ অবস্থায় উপনীত হয়ে যদি এক সাথে সম্মুখ ও পশ্চাৎদিকে সংঘটিত হয়, তবে ঐ বিক্রিয়াকে উভমুখী বিক্রিয়া বলা হয়ে থাকে।

বিক্রিয়ার গতি

একক সময়ে কোনো বিক্রিয়ার বিক্রিয়কসমূহের ঘনমাত্রা বা পরিমাণ হ্রাসের হারকে অথবা উৎপাদ পদার্থের ঘনমাত্রা বা পরিমাণ বৃদ্ধির হারকে ঐ বিক্রিয়ার গতি বলে।

বিক্রিয়ার হার

প্রতি একক সময়ে বিক্রিয়কের ঘনমাত্রা হ্রাসে বা বিক্রিয়ায় সৃষ্ট উৎপাদের ঘনমাত্রার বৃদ্ধির মাত্রাকে বিক্রিয়ার হার বলা হয়।

সক্রিয়ণ শক্তি

যে পরিমাণ শক্তি অর্জন করে বিক্রিয়ক অণু বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারে তাকে সক্রিয়ণ শক্তি বলা হয়।

আরহেনিয়াস সমীকরণ

বিজ্ঞানী আরহেনিয়াস বিক্রিয়ার হার ধ্রুবক, তাপমাত্রা ও সক্রিয়ণ শক্তির মধ্যকার সম্পর্কের একটি সমীকরণ প্রতিষ্ঠা করেন, যা আরহেনিয়াস সমীকরণ নামে পরিচিত।

প্রভাবক

বিক্রিয়ার গতি বৃদ্ধি বা হ্রাসের জন্য যেসব পদার্থ ব্যবহার করা হয় এবং ভর ও সংযুক্তিতে যারা অপরিবর্তিত থাকে তাদেরকে প্রভাবক বলে।

প্রভাবন

প্রভাবক দ্বারা বিক্রিয়ার গতি হ্রাস-বৃদ্ধি করার প্রক্রিয়াকে প্রভাবন (Catalysis) বলে।

ধনাত্মক প্রভাবক

কোনো প্রভাবক যখন কোনো বিক্রিয়ার হারকে বৃদ্ধি করে তখন ঐ প্রভাবকে ধনাত্মক প্রভাবক বলে।

ঋণাত্মক প্রভাবক 

যে প্রভাবক বিক্রিয়ার হার হ্রাস করে তাকে ঋণাত্মক প্রভাবক বলে।

স্ব-প্রভাবক

কিছু কিছু রাসায়নিক বিক্রিয়া প্রথমে ধীরে ঘটলেও পরে ক্রমান্বয়ে বিক্রিয়ার গতি বৃদ্ধি পায়। কারণ বিক্রিয়ায় উৎপন্ন কোনো একটি উৎপাদ ঐ বিক্রিয়ার প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। এই প্রভাবককে স্ব-প্রভাবক বলে।

ভর ক্রিয়ার সূত্র

কোনো নির্দিষ্ট সময়ে যেকোনো বিক্রিয়ার হার ঐ সময়ে উপস্থিত বিক্রিয়কগুলো সক্রিয় ভরের সমানুপাতিক।

রাসায়নিক বিক্রিয়ার সাম্যাবস্থা

উভমুখী বিক্রিয়ার সম্মুখ ও পশ্চাৎ বিক্রিয়ার হার পরস্পর সমান হলে ঐ অবস্থাকে রাসায়নিক সাম্যাবস্থা বলে। সাম্যাবস্থা তাপ, চাপ, ঘনমাত্রার সাথে পরিবর্তিত হলেও সাম্যধ্রুবক Kp ও Kc শুধু তাপমাত্রার সাথে পরিবর্তিত হয়।

লা-শাতেলিয়ারের নীতি

কোনো সাম্যাবস্থার তাপমাত্রা, চাপ বা ঘনমাত্রা পরিবর্তন করলে সাম্যাবস্থার অবস্থান ডানে বা বামে এমনভাবে পরিবর্তিত হবে যেন তাপ, চাপ ও ঘনমাত্রার পরিবর্তনের ফলাফল প্রশমিত হয়।

সাম্যধ্রুবক

বিক্রিয়ার সাম্যাবস্থায় উৎপাদের সক্রিয় ভরের গুণফল ও বিক্রিয়কের সক্রিয় ভরের গুণফলের অনুপাতকে সাম্য ধ্রুবক বলা হয়।

সাম্যাবস্থা 

উভমুখী বিক্রিয়ায় যখন সম্মুখমুখী বিক্রিয়ার হার ও পশ্চাৎমুখী বিক্রিয়ার হার সমান হয়, সে অবস্থাকে বিক্রিয়ার সাম্যাবস্থা বলে। সাম্যাবস্থা উভমুখী বিক্রিয়ার গতিশীল অবস্থা থাকে।

সক্রিয় ভর

বিক্রিয়কের মোলার ঘনমাত্রা ও আংশিক চাপকে সক্রিয় ভর বলা হয়।

বন্ধন শক্তি

বাষ্পীয় অবস্থায় পদার্থের অণুর নির্দিষ্ট দুটি পরমাণুর মধ্যস্থ একই প্রকার এক মোল বন্ধনকে ভেঙে পরমাণু বা আয়নে পরিণত করতে যে পরিমাণ গড় শক্তির প্রয়োজন হয়, তাকে সংশ্লিষ্ট বন্ধনের বন্ধন শক্তি বলা হয়।

বিক্রিয়া তাপ

কোনো বিক্রিয়ার সমতাযুক্ত সমীকরণ মতে বিক্রিয়কসমূহের সংখ্যানুপাতিক মোল পরিমাণে সম্পূর্ণরূপে বিক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন বা শোষিত তাপের পরিমাণকে বিক্রিয়া তাপ বলা হয়।

প্রশমন তাপ

এক গ্রাম তুল্য ভর পরিমাণ এসিডের লঘু দ্রবণকে এক তুল্য ভর পরিমাণ ক্ষারের লঘু দ্রবণ দ্বারা প্রশমিত করতে বিক্রিয়া সিস্টেমের যে তাপের পরিবর্তন ঘটে তাকে প্রশমন তাপ বলা হয়।

মৃদু এসিড

যে সব এসিড জলীয় দ্রবণে আংশিকভাবে বিয়োজিত হয় তাকে মৃদু এসিড বলা হয়। বিভিন্ন জৈব এসিড যেমন- মিথানোয়িক এসিড (H-COOH), ইথানোয়িক এসিড (CH3-COOH)।

তীব্র এসিড

যে সব এসিড জলীয় দ্রবণে সম্পূর্ণভাবে আয়নিত হয় তাকে তীব্র এসিড বলে। এদের বিয়োজনকে তীর চিহ্ন (→) দ্বারা প্রকাশ করা হয়। যেমন- HCl, HNO3, H2SO4 ইত্যাদি তীব্র এসিড।

ল্যাভয়সিয়ে সূত্র

কোনো বিক্রিয়ায় যে পরিমাণ তাপের পরিবর্তন ঘটে, ঐ বিক্রিয়াটি বিপরীত দিকে ঘটলে একই পরিমাণ তাপের পরিবর্তন ঘটে থাকে; তবে তাপ পরিবর্তনের চিহ্ন বিপরীত হয়।

হেসের সূত্র

যদি কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ার প্রারম্ভিক ও শেষ অবস্থা একই থাকে, তবে বিক্রিয়াটি এক বা একাধিক ধাপে সংঘটিত হোক না কেন প্রতিক্ষেত্রে বিক্রিয়া তাপ সমান থাকবে।

গঠন তাপ

প্রমাণ অবস্থায় কোনো যৌগের উপাদান মৌল সমূহ থেকে ঐ যৌগের এক মোল উৎপাদনকালে তাপের যে পরিবর্তন ঘটে তাকে যৌগটির প্রমাণ গঠন তাপ বলা হয়।

error: Content is protected !!