মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধ হয়েই মানুষকে বসবাস করতে হয়। আমরা পিতা-মাতা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীদের নিয়ে সামাজিকভাবে একসাথে বসবাস করি। একজনের দুঃখে অন্যজন সাড়া দেই। আপদে-বিপদে একে-অপরকে সহযোগিতা করি। পরস্পরের প্রতি এ সহানুভূতি ও দায়িত্বই হাক্কুল ইবাদ (বান্দার হক বা অধিকার)।
এ ব্যাপারে মহানবী (স) বলেন- “নিশ্চয়ই তোমার উপর তোমার প্রতিপালকের, তোমার শরীরের উপর তোমার, তোমার উপর তোমার স্ত্রীর, এবং সন্তানের হক আছে। অতএব হকদারকে তার হক দিয়ে দেবে।”
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা মানুষের প্রতি মানুষের অধিকার আদায়ের আদেশ করেছেন। কোন কোন অধিকারকে ফরয করেছেন। এগুলো অস্বীকার ও অমান্য করলে পরকালে কঠিন শাস্তি পেতে হবে।
রাসুলুল্লাহ (স.) আরও বলেছেন, “একজন মুসলিমের উপর অপর মুসলিমের ছয়টি অধিকার রয়েছে। যেমন: সালামের জবাব দেওয়া, রোগীকে দেখতে যাওয়া, জানাযায় অংশগ্রহণ করা, দাওয়াত কবুল করা, মজলুমকে সাহায্য করা ও হাঁচির জবাব দেওয়া।” (বুখারি ও মুসলিম)
মানুষের প্রতি মানুষের হক বা অধিকারকে আটটি ভাগে ভাগ করা যায়, যেমন:
১) নিকটাত্মীয়ের হক
২) দূরাত্মীয়ের হক
৩) প্রতিবেশীর হক
৪) দেশবাসীর হক
৫) শাসক-শাসিতের হক
৬) সাধারণ মুসলমানের হক
৭) অভাবী লোকের হক এবং
৮) অমুসলিমের হক।
Frequently Asked Questions
হাক্কুল ইবাদ বলতে কী বোঝায়?
হাক্কুল ইবাদ বলতে আল্লাহর বান্দাদের পরস্পরের প্রতি যেসব অধিকার রয়েছে, সেগুলোকে বোঝায়। এটি মূলত মানবতাবাদী মূল্যবোধের প্রতিফলন।
হাক্কুল ইবাদ কেন গুরুত্বপূর্ণ?
হাক্কুল ইবাদ একটি সমাজকে শান্তিপূর্ণ ও সুন্দর করে তোলে। এটি সমাজের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সৃষ্টি করে এবং সমাজের সামগ্রিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
হাক্কুল ইবাদের উদাহরণ কি কি?
হাক্কুল ইবাদের উদাহরণ হিসেবে বলা যায়:
-পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান
-পরস্পরের সাহায্য করা
-পরস্পরের কষ্ট দূর করার চেষ্টা করা
-পরস্পরের গোপনীয়তা রক্ষা করা
-পরস্পরের সম্পত্তি রক্ষা করা
হাক্কুল ইবাদ ও হাক্কুল্লাহের মধ্যে পার্থক্য কি?
হাক্কুল্লাহ বলতে আল্লাহর প্রতি আমাদের কর্তব্যকে বোঝায়। আর হাক্কুল ইবাদ বলতে অন্য মানুষের প্রতি আমাদের কর্তব্যকে বোঝায়।
ইসলামে হাক্কুল ইবাদের গুরুত্ব কেন দেয়া হয়?
ইসলামে মানবতাবাদী মূল্যবোধকে প্রাধান্য দেয়া হয়। হাক্কুল ইবাদ এই মানবতাবাদী মূল্যবোধের একটি অংশ। ইসলাম মানুষকে পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান করতে শেখায় এবং সমাজের সামগ্রিক কল্যাণের জন্য কাজ করতে উৎসাহিত করে।
হাক্কুল ইবাদ না মানলে কি হবে?
হাক্কুল ইবাদ না মানলে সমাজে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন:
-সমাজে অশান্তি
-পারিবারিক কলহ
-সামাজিক অস্থিরতা