মুক্তাক্ষর কাকে বলে? বদ্ধাক্ষর কাকে বলে?

মুক্তাক্ষর কাকে বলে?

যে সব অক্ষর উচ্চারণ কালে আটকে যায়না এবং ইচ্ছেমত দীর্ঘ করে টেনে পড়া যায় , তাকে মুক্তাক্ষর বলে৷ যেমনঃ কি, কে ,হ্যাঁ,হা, সু,মা, ও,না ,বা, যা ইত্যাদি ৷

উদাহরণঃ আমাকে(আ+মা+কে), তোমাকে (তো+মা+কে), পৃথিবী(পৃ+থি+বী),বাবাকে( বা+বা+ কে), জননী(জ+ন+নী), এখানে(এ+খা+নে, জানিনা(জা+নি+না), ইত্যাদির প্রত্যেকটির তিনটি করে অক্ষর রয়েছে যার এক একটা অক্ষরই এক একটা মুক্তাক্ষর৷ এক একটি মুক্তাক্ষর যে কোনো ছন্দেই এক মাত্রা ধরা হয়। 

বদ্ধাক্ষর কাকে বলে?

যে সব অক্ষর উচ্চারণ কালে একা উচ্চারিত হতে পারেনা বা পরবর্তী শব্দের সাথে মিলিয়ে পড়তে হয় এবং দীর্ঘ করে টেনে পড়া যায় না তাকে বদ্ধাক্ষর বলে। 

যেমনঃ দিন্/রাত্/ধান্/গান্/বোন্/ হাত্/ ফুল্/ফাল্/হয়্/নয়্ ইত্যাদি ৷

বদ্ধাক্ষর গুলো স্বরবৃত্তে সাধারণত এক মাত্রা, বদ্ধক্ষর মাত্রাবৃত্তে সাধারণত দইুমাত্রা, এবং অক্ষরবৃত্তে সাধারণত শব্দের প্রথমে বা আদিতে বা মধ্যে থাকলে এক মাত্রা এবং শব্দের শেষে থাকলে দইুমাত্রা ধরা হয় ৷

যেমনঃ হয়তাে(হয়+তো),নয়তাে( নয়+তো),ফালতু(ফাল+তু), একটা(এক+টা) , পাঁচটা(পাঁচ+টা), মনটা(মন+টা), গানটা(গান+টা) ইত্যাদির আদিতে বদ্ধাক্ষর থাকায় অক্ষরবৃত্তে প্রথম দুই অক্ষর মিলে এক মাত্রা এবং পরবর্তী এক অক্ষর এক মাত্রা মোট দুই মাত্রা হবে।

যেমনঃ ১+১=২

কিন্তু মাত্রা বৃত্তে তিন মাত্রা হবে, কারণ মাত্রাবৃত্তে প্রত্যেকটি অক্ষরকেই এক একটি মাত্রা ধরা হয় এবং স্বরবৃত্ত বদ্ধাক্ষর সব সময় এক মাত্রা হওয়ায় মোট দুই মাত্রা হবে। হয়তো এ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে অক্ষরবৃত্তে ও স্বরবৃত্তে একই মনে হবে। কিন্তু বদ্ধাক্ষর শব্দের শেষে থাকলে অক্ষর বৃত্তে দুইমাত্রা হবে, অপর দিকে স্বরবৃত্তে বদ্ধাক্ষর সব সময়ই একমাত্রা হবে। 

যেমনঃ (একাত্তর=এ+কাত্+তর), (সীমান্তর=সী+মান্+তর), (অবান্তর=অ+বান্+তর),  (অনন্তের=অ+নন্+তের)৷ 

এখানে তিনটি শব্দেই অক্ষরবৃত্তে হবে, ১ + ১ + ২ = ৪ মাত্রা৷

মাত্রা বৃত্তে হবে, ১ + ২ + ২ = ৫ মাত্রা এবং স্বরবৃত্তে হবে, ১ + ১ + ১ = ৩ মাত্রা৷

মুুক্তাক্ষর সব ছন্দেই একমাত্রা হওয়ায় বদ্ধাক্ষরের মাত্রা গণনা ভেদে বাংলা ছন্দ রীতিতে বিভেদ ঘটে৷

আরো পড়ুনঃ

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url