কালবৈশাখী ঝড় ও টর্নেডো

কালবৈশাখী ঝড় ও টর্নেডো 

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগসমূহের মধ্যে কালবৈশাখী ঝড় এবং টর্নোডো অন্যতম। কালবৈশাখী ঝড় গ্রীষ্মকালীন জলবায়ুর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। সাধারনত বৈশাখ মাসের শেষের দিকে এ ঝড় হতে দেখা যাওয়ায় একে কালবৈশাখী ঝড় বলে। মার্চ - এপ্রিল মাসে সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ আকাশ কালো মেঘে ঢেকে বজ্রবিদ্যুৎসহ প্রবল ঝড়ো হাওয়া প্রবাহিত হয়। এর ঝড়ই কালবৈশাখী ঝড় নামে পরিচিত। এ সময় বাৎসরিক বৃষ্টিপাতের প্রায় এ - পঞ্চমাংশ সংঘটিত হয়। অনেক সময় বৃষ্টিপাতের সাথে শিলাবৃষ্টিও হয়ে থাকে। দেশের পূর্বাঞ্চলে এ ঝড় অধিক হয়ে থাকে। কালবৈশাখী ঝড়ে মানুষ, পশুপাখি ও সম্পদহানি ঘটে, কাঁচা ঘরবাড়ি ধ্বংস হয় এবং ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়।

অন্যদিকে, টর্নেডোও একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। টর্নেডো শব্দটি স্পেনিশ Tornada থেকে এসেছে, যার অর্থ বজ্রঝড় বা Thunder Storm। ঘূর্ণিঝড়ের ন্যায় টর্নেডোর ক্ষেত্রেও প্রচন্ডবেগে বাতাস ঘুরতে ঘুরতে প্রবাহিত হয়। কোনো স্থানে নিম্নচাপ বা লঘুচাপ সৃষ্টি হলে উক্ত স্থানের উষ্ণ বাতাস উপরে উঠে যায় এবং ঐ শূন্য জায়গা পূরণের জন্য চতুর্দিকের শীতল বায়ু দ্রুতগতিতে ধাবিত হয় এবং টর্নেডোর উৎপত্তি হয়। সাধারণত এপ্রিল-মে মাসে টর্নেডো আঘাত হানে। ১৯৮৯ সালে মানিকগঞ্জের সাটুরয়ায় প্রলয়ংকরী টর্নোডো আঘাত হানে। ১৯৮৯ সালে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় প্রলয়ংকারী টর্নেডো আঘাত হানে এবং ব্যাপক ধ্বংসলীলা সাধিত হয়। টর্নেডোর ক্ষেত্রে বাতাসের গতিবেগ সাধারণত ঘণ্টায় ৪৮০ থেকে ৮০০ কিলোমিটার হতে পারে। টর্নেডোর বিস্তার মাত্র কয়েক মিটার এবং দৈর্ঘ্য ৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। বাংলাদেশে প্রায় প্রতি বছর টর্নেডো হতে দেখা যায়। টর্নোডো এবং ঘূর্ণিঝড়ের মূল পার্থক্য হলো ঘূর্ণিঝড় উৎপত্তি হয় সমুদ্রে আর টর্নোডো যে কোনো স্থানে সৃষ্টি হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url