যে সহে, সে রহে, ভাবসম্প্রসারণ

মূলভাব: জীবনের চলার পথে অনেক লাঞ্ছনা, গঞ্জনা ও যাতনা সহ্য করতে হতে পারে। কিন্তু এতে ধৈর্য হারালে চলবে না বরং সহনশীলতার সঙ্গে সব ধরনের প্রতিকূলতাকে মোকাবিলা করার মতো মানসিক ক্ষমতার অধিকারী হতে হবে।

সম্প্রসারিত ভাব: মানবজীবনে চলার পথ বড়োই বন্ধুর। জীবনের নানা প্রতিকূল অবস্থার সঙ্গে সংগ্রাম করে মানুষকে এগিয়ে যেতে হয়। রোগ-শোক, দুঃখকষ্ট, দারিদ্র্য ও হতাশা- এসবের সঙ্গে সংগ্রাম করতে গিয়ে মানুষ অনেক সময় দিশাহারা হয়ে পড়ে। এমনকি মাঝে মাঝে বাঁচার ইচ্ছাও হারিয়ে ফেলে। কিন্তু মানুষই পারে প্রত্যাশার দৃঢ়প্রতিজ্ঞা নিয়ে সবকিছুকে জয় করতে। সেই জন্য প্রয়োজন ধৈর্য, শক্তি, সাহস, অধ্যবসায় ও সহিষ্ণুতা। এ গুণগুলো থাকা সব মানুষের জন্য আবশ্যক। তা না হলে মানুষ জীবন-সংগ্রামে টিকে থাকতে পারবে না; পদে পদে তাকে পর্যুদস্ত হতে হবে। জগৎসংসারে যারা সহিষ্ণু ও ধৈর্যশীল তারা জীবনে বহুক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে পারে। ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা মানুষকে অন্তরের শক্তিতে বলীয়ান করে তোলে। সেই শক্তি মানুষকে অনুপ্রাণিত করে সমস্যা মোকাবিলায়, প্রতিকূলতা অতিক্রমে। পৃথিবীতে মহামানবরা মানুষকে সত্য, ন্যায় ও সুন্দর জীবনের পথে আনার জন্য বহু ত্যাগ, তিতিক্ষা ও ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন। কখনো হাল ছেড়ে দেননি, ধৈর্যহারা হয়ে পড়েননি বরং আশার আলো এবং সহনশীল মনোভাব নিয়ে কাজ করে গেছেন। এ কারণে তাঁরা পৃথিবীর বুকে দুঃখ ও বিপদ জয়ের অক্ষয় কীর্তি রেখে যেতে পেরেছেন। তাঁদের মহৎ এ ত্যাগের ফলেই মানুষ পেয়েছে সুন্দর জীবন ও বাসযোগ্য পৃথিবী।

মন্তব্য: ত্যাগ, ধৈর্য, সহিষ্ণুতাই মানবজীবনের সুখ-শান্তি ও প্রতিষ্ঠা লাভের পূর্বশর্ত। ধৈর্যশীল মানুষই পারে ধীরস্থিরভাবে প্রতিকূলতাকে মোকাবিলা করতে। মূলত, ধৈর্য ও সহিষ্ণুতাই মানবজীবনকে নিয়ে যেতে পারে সফলতার শিখরে।

error: Content is protected !!