যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ, ভাবসম্প্রসারণ

মূলভাব: সুন্দর পৃথিবীতে বেঁচে থাকার আকাঙ্ক্ষা প্রতিটি মানুষের। এমনকি মৃত্যুপথযাত্রী মানুষও জীবনের আশা একেবারে পরিত্যাগ করে না। ক্ষণস্থায়ী জীবনটাকে মানুষ অনেক আশা নিয়ে চিরদিন ধরে রাখতে চায়।

সম্প্রসারিত ভাব: পৃথিবীতে মানুষ যতদিন বেঁচে থাকে ততদিন তার চাওয়া-পাওয়ার শেষ থাকে না। প্রতিনিয়ত সে ব্যস্ত থাকে ধনসম্পদ, যশ-খ্যাতি ও প্রভাব-প্রতিপত্তি লাভের দুর্বার আকাঙ্ক্ষা পূরণে। কারণ, পৃথিবীতে মানুষের আকাঙ্ক্ষা অসীম। একটি চাহিদা পূরণ হলে অন্য একটি চাহিদা পূরণের জন্য সে অস্থির হয়ে ওঠে। এ সবকিছুর মূলেই রয়েছে আশা। আশাই মানুষকে তাড়িত করে, বাঁচিয়ে রাখে। মানুষ আশা নিয়েই বেঁচে থাকে, সংগ্রাম করে। ব্যর্থতা এলেও আশার কারণে মানুষ হতাশায় ভোগে না বরং আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে শক্ত হাতে হাল ধরে। অর্থাৎ যতক্ষণ পর্যন্ত একজন মানুষের দেহে প্রাণ থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত তার আশারও শেষ নেই। কারণ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মানুষ প্রত্যাশা করে বৈচিত্র্যে ভরপুর পৃথিবীতে বেঁচে থাকার। তাই তো কবি বলেছেন-‘মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে/ মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই।’ অর্থাৎ সুন্দর ভুবনে মানুষের মাঝে বেঁচে থাকার দুর্বার আকাঙ্ক্ষা সব মানুষের। শতায়ু লাভ করা ব্যক্তিও মৃত্যু কামনা করে না। পরিবার-পরিজন নিয়ে আরও কিছুদিন বাঁচার ইচ্ছা পোষণ করে। তাই দুঃখকষ্ট ও পরাজয়ের মাঝে আশাই মানুষের একমাত্র অবলম্বন।

মন্তব্য: মানুষ আশার উপর ভর করেই বেঁচে আছে। আশাই মানুষকে প্রেরণা দেয়, অনুপ্রাণিত করে, বাঁচার স্বপ্ন দেখায়। আশাই মানুষকে জীবন-সংগ্রামের পথে পরিচালিত করে।

error: Content is protected !!