প্রাণ থাকলেই প্রাণী হয়, কিন্তু মন না থাকলে মানুষ হয় না। ভাবসম্প্রসারণ

মূলভাব: কেবল প্রাণের অধিকারী হওয়াই মনুষ্যত্বের লক্ষণ নয়। প্রাণের অস্তিত্বের নিরিখে বিচার করলে মানুষ সব কীটপতঙ্গ ও জীবজন্তুর সমগোত্রীয়। পক্ষান্তরে, বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন সংবেদনশীল মনের অধিকারী হতে পারলে মানুষ ইতর প্রাণীগোত্রের সীমা ছাড়িয়ে মানুষের মর্যাদায় অভিষিক্ত হতে পারে।

সম্প্রসারিত ভাব: মানুষ প্রাণিকুলের সদস্য হলেও অন্যান্য প্রাণী থেকে আলাদা। অন্যান্য প্রাণীর সঙ্গে পার্থক্যের মূলে রয়েছে মানুষের মনোজগতের বৈশিষ্ট্য। মানুষ প্রাণী হিসেবে সহজাত কিছু গুণ নিয়ে জন্মায়। সেই সহজাত গুণে আবদ্ধ থাকলে মানুষ প্রাণিজগতের গণ্ডি পার হতে পারে না। শিক্ষা, সাধনা ও অনুশীলনের মাধ্যমে মানুষ পারে সে গণ্ডি পার হতে। মানবিক গুণাবলি আয়ত্ত করেই একজন সত্যিকারের মানুষ হয়ে উঠতে পারে। তখন অন্যান্য প্রাণী থেকে সে হয়ে যায় আলাদা। সত্যিকারের মানুষ চিন্তা-চেতনা, জ্ঞান-বুদ্ধি, আবেগ-অনুভূতির অধিকারী ও বিবেকবোধ দ্বারা পরিচালিত হয়। যে মানুষের আকৃতি নিয়ে পশুর মতো কাজ করে, যার মধ্যে মানবতাবোধ, বিবেচনাবোধ ও বিবেকবুদ্ধি নেই-তাকে সত্যিকার অর্থে মানুষ বলা যায় না। মানুষ কেবল প্রাণের অধিকারী নয়, মনেরও অধিকারী। মানুষের মন অন্যকে ভালোবাসে, অন্যের ভালোবাসা পেতে চায়।

মন্তব্য: মানুষ হতে হলে কেবল প্রাণ থাকলে চলবে না, তাকে হতে হবে সুন্দর, সুস্থ ও মানবিক গুণাবলিসম্পন্ন মনের অধিকারী।

error: Content is protected !!