নৃবিজ্ঞান বলতে কি বোঝায়?

নৃবিজ্ঞান (Anthropology) হলো মানুষ এবং মানব সমাজ নিয়ে অধ্যয়নের একটি বিজ্ঞানসম্মত শাখা। এর মূল লক্ষ্য হলো বিভিন্ন সংস্কৃতি, সমাজ, এবং মানব জীবনের বিবর্তনকে সামগ্রিকভাবে বোঝা।

নৃবিজ্ঞানীরা সাধারণত চারটি প্রধান উপশাখায় কাজ করে থাকেন:

  • সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান (Cultural Anthropology): এই শাখাটি মানুষের বিভিন্ন সংস্কৃতি, প্রথা, বিশ্বাস, এবং সামাজিক কাঠামো নিয়ে গবেষণা করে। এটি বুঝতে চেষ্টা করে যে বিভিন্ন সমাজে মানুষ কীভাবে জীবনযাপন করে, একে অপরের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে এবং তাদের নিজস্ব জগতকে ব্যাখ্যা করে।
  • প্রত্নতত্ত্ব (Archaeology): প্রত্নতত্ত্ববিদরা প্রাচীন মানব সমাজের জীবনযাপন সম্পর্কে জানতে মাটির নিচে চাপা পড়ে থাকা বস্তু, যেমন—আসবাবপত্র, হাতিয়ার, স্থাপত্য, ইত্যাদি খনন করে এবং বিশ্লেষণ করে। এর মাধ্যমে তারা মানব ইতিহাসের দীর্ঘ পথ ধরে কীভাবে সভ্যতা বিকশিত হয়েছে তা বোঝার চেষ্টা করে।
  • ভাষাতত্ত্ব (Linguistic Anthropology): এই শাখাটি মানুষের ভাষার উৎপত্তি, গঠন এবং সমাজে এর ব্যবহার নিয়ে গবেষণা করে। ভাষা কীভাবে সংস্কৃতি ও মানুষের চিন্তাভাবনার সাথে সম্পর্কিত, তা এটি বিশ্লেষণ করে।
  • জৈবিক বা শারীরিক নৃবিজ্ঞান (Biological or Physical Anthropology): এই শাখাটি মানব বিবর্তন, জেনেটিক্স, প্রাইমেটদের আচরণ এবং মানুষের শারীরিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে অধ্যয়ন করে। এটি বুঝতে চেষ্টা করে যে মানুষ কীভাবে একটি প্রজাতি হিসাবে বিবর্তিত হয়েছে এবং পরিবেশের সাথে নিজেদেরকে খাপ খাইয়ে নিয়েছে।

সংক্ষেপে, নৃবিজ্ঞান হলো মানুষকে সামগ্রিকভাবে বোঝার একটি চেষ্টা—তাদের অতীত, বর্তমান, সংস্কৃতি, ভাষা, এবং জীববিজ্ঞান—সবকিছু নিয়েই এর গবেষণা।

error: Content is protected !!