ডেঙ্গু মশা চেনার উপায় নিম্নরূপ:
দেহের আকার: ডেঙ্গু মশা মাঝারি আকারের হয়। এর দৈর্ঘ্য প্রায় 5 মিলিমিটার।
রঙ: ডেঙ্গু মশার দেহের রঙ হালকা বাদামী বা কালো। এর পায়ে সাদা-কালো ডোরাকাটা দাগ থাকে।
লেজ: ডেঙ্গু মশার লেজ সরু এবং লম্বা। এর লেজের শেষে একটি কালো ডগা থাকে।
ভ্রমণের ধরন: ডেঙ্গু মশা সাধারণত দ্রুত উড়ে যায়। এগুলি সাধারণত মানুষের কাছাকাছি ঘোরাফেরা করে।

ডেঙ্গু মশা এবং অন্যান্য মশার মধ্যে পার্থক্য
ডেঙ্গু মশা এবং অন্যান্য মশার মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ:
| বৈশিষ্ট্য | ডেঙ্গু মশা | অন্যান্য মশা |
| দেহের আকার | মাঝারি | ছোট বা বড় |
| রঙ | হালকা বাদামী বা কালো | নাও থাকতে পারে |
| লেজের আকার | সরু ও লম্বা | মোটা ও খাটো |
| ভ্রমণের ধরন | দ্রুত | ধীরে |
ডেঙ্গু মশা সাধারণত দিনের বেলায় কামড়ায়। এরা সাধারণত মানুষের ঘাড়, হাত, পায়ের গোড়ালি এবং কনুইতে কামড়ায়। ডেঙ্গু মশার কামড়ে সাধারণত ব্যথা বা চুলকানি হয় না। তবে, কিছু ক্ষেত্রে কামড়ের জায়গাটি ফুলে যেতে পারে।
ডেঙ্গু মশার বিস্তার রোধে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে
ডেঙ্গু মশার বিস্তার রোধে নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে:
- মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করা: ডেঙ্গু মশার প্রজনন ক্ষেত্র হল পরিষ্কার পানি। তাই বাড়ি-ঘর, আবাসিক এলাকা, অফিস, স্কুল, কলেজ, হাসপাতালের আশেপাশে যেসব জায়গায় পানি জমে থাকে সেসব জায়গা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, নিয়মিত পানি পরিবর্তন করা, পাত্রে পানি জমতে না দেওয়া, ট্যাপের ফুটো বন্ধ করা, ড্রেন পরিষ্কার রাখা, গাছের টব থেকে পানি ফেলে দেওয়া, ফুলের পাত্রে পানি জমতে না দেওয়া, বৃষ্টির পানি জমে থাকা জায়গাগুলোতে মশার লার্ভা ধ্বংস করা ইত্যাদি পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে।
- মশার বিস্তার রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা: ডেঙ্গু মশার বিস্তার রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই ডেঙ্গু মশার বিস্তার, এর ক্ষতিকর প্রভাব, মশার কামড় থেকে বাঁচার উপায় ইত্যাদি বিষয়ে জনগণকে সচেতন করা দরকার। এজন্য সরকার, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, মিডিয়া ইত্যাদির মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালানো যেতে পারে।
- মশা প্রতিরোধক ব্যবহার করা: ডেঙ্গু মশার কামড় থেকে বাঁচার জন্য মশা প্রতিরোধক ক্রিম, স্প্রে, লোশন ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও, মশার কামড় থেকে বাঁচতে পোশাক দিয়ে শরীর ঢেকে রাখা, ঘরের জানালা-দরজা বন্ধ রাখা, মশার জাল ব্যবহার করা ইত্যাদি পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে।
- সমন্বিত মশা নিধন ব্যবস্থাপনা (Integrated Vector Management, IVM): IVM হল মশার বিস্তার রোধে বিভিন্ন পদ্ধতি একত্রে ব্যবহার করার একটি পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করা, মশার বিস্তার রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং মশা প্রতিরোধক ব্যবহার করা ইত্যাদি পদ্ধতি একত্রে ব্যবহার করা হয়।
- গবেষণা ও উন্নয়ন: ডেঙ্গু মশার বিস্তার রোধে নতুন নতুন পদ্ধতি ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য গবেষণা ও উন্নয়ন করা জরুরি।
উল্লেখ্য, ডেঙ্গু মশার বিস্তার রোধে উপরোক্ত পদক্ষেপগুলো একত্রে গ্রহণ করা হলে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব হবে।
ডেঙ্গু একটি মারাত্মক রোগ। ডেঙ্গু মশার কামড়ের মাধ্যমে ডেঙ্গু ভাইরাস ছড়ায়। ডেঙ্গু ভাইরাসের কারণে জ্বর, মাথাব্যথা, পেশী ব্যথা, চোখের পিছনে ব্যথা, বমি বমি ভাব এবং বমি হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে ডেঙ্গু ভাইরাসের কারণে রক্তপাত এবং মৃত্যুও হতে পারে।