অর্থই অনর্থের মূল, ভাবসম্প্রসারণ

মূলভাব: মানবজীবনে অর্থের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে এই অর্থের যথাযথ ব্যবহার করতে না পারলে তা অনেক সময় অনর্থের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

সম্প্রসারিত ভাব: অর্থ মানবজীবনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মানবজীবনে প্রতি ক্ষেত্রের কার্যকারিতা অর্থের উপর নির্ভরশীল। অর্থই আজীবন মানুষের সব চাওয়া-পাওয়ার প্রয়োজন মেটায়। অর্থ না থাকলে জীবনে দুঃখকষ্টের শেষ থাকে না। অর্থ না থাকলে অনেক সময় জীবনকে মূল্যহীন বা অর্থহীন বলে মনে হয়। এজন্যই মানুষ অর্থের পিছনে ছুটে চলেছে নিরন্তর। কী করে অঢেল অর্থ উপার্জন করা যায়, সেই চেষ্টার শেষ নেই। কিন্তু অনেক কষ্ট ও সাধনার এ অর্থই অনেক সময় অনর্থের মূল হয়ে দাঁড়ায়। কারণ বেশি অর্থ মানুষকে অন্যায়ের পথে, অপরাধের পথে ঠেলে দেয়। বেশি অর্থ অনেক সময় মানুষকে অমানুষ করে তোলে। অর্থকে কেন্দ্র করে পৃথিবীজুড়ে ঘটে চলেছে নানা জঘন্য, অমানবিক ও অকল্যাণকর ঘটনা। অর্থের মোহ বড়োই ভয়াবহ। অর্থের কারণে পিতা-পুত্র, ভাই-ভাই, রাজায়-রাজায়, দেশে-দেশে ঘটে চলেছে অনেক অপ্রীতিকর ঘটনা। অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি করে অর্থ আদায়ের চেষ্টা চলে, না দিলে প্রাণটা কেড়ে নেওয়া হয়। অর্থের লোভ এমনই ভয়ানক যে মানুষ বিবেক, মনুষ্যত্ব, নীতি বিসর্জন দিতে দ্বিধা করে না। সমাজের অর্থকেন্দ্রিক আর একটি ভয়ানক ব্যাধি যৌতুক, যার বলি হচ্ছে অসংখ্য কন্যাসন্তান।

মন্তব্য: এ কথা অস্বীকার করা যায় না, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অন্যায়-অনাচার ও দুর্নীতি ইত্যাদির পিছনে অনেক সময় অর্থই প্রধান ভূমিকা পালন করে। তবে অর্থ সবসময়ই অনর্থের কারণ হয় না। এর সদ্‌ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন থাকলে অর্থ অনেক সময় মানুষের মর্যাদা বৃদ্ধি করে। তাই এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়- ব্যবহারকারী, ব্যবহার ও কার্যকারিতার উপরই অর্থের ভালোমন্দ ভূমিকা নির্ভর করে।

error: Content is protected !!