রাসায়নিক বর্জ্য কী? কিভাবে তৈরি হয়?

রাসায়নিক বর্জ্য কী?

রাসায়নিক পরীক্ষাগারে বিভিন্ন ধরনের সংশ্লেষণ, পরিমাণগত ও গুণগত বিশ্লেষণের প্রাক্কালে সৃষ্ট অধঃক্ষেপ, তরল ও গ্যাসীয় পদার্থের উদ্ভব হয়। এগুলোকে সামষ্টিকভাবে রাসায়নিক বর্জ্য বলা হয়।

রাসায়নিক বর্জ্য কিভাবে তৈরি হয়?

রাসায়নিক বর্জ্য বিভিন্ন উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য উৎস হল:

শিল্প প্রতিষ্ঠানের রাসায়নিক বর্জ্য

  • ঔষধ উৎপাদন: ওষুধ তৈরির সময় বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে কিছু বিষাক্ত বা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
  • রাসায়নিক উৎপাদন: প্লাস্টিক, সার, কীটনাশক, রঙ এবং অন্যান্য রাসায়নিক পণ্য তৈরির সময় বিপুল পরিমাণে রাসায়নিক বর্জ্য তৈরি হয়।
  • ইলেকট্রনিক্স: ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি তৈরির সময় ব্যবহৃত সীসা, ক্যাডমিয়াম এবং মার্কারি এর মতো বিষাক্ত ধাতু রাসায়নিক বর্জ্য তৈরি করে।
  • খনিজ প্রক্রিয়াকরণ: খনিজ থেকে ধাতু উত্তোলনের সময় ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ মাটি ও পানিতে দূষণ সৃষ্টি করে।
  • চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ: চামড়া তৈরির সময় ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ বিষাক্ত এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।
  • বস্ত্রশিল্প: বস্ত্র রঞ্জন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের সময় ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ পানি ও মাটি দূষিত করে।

কৃষির রাসায়নিক বর্জ্য

  • সার ও কীটনাশক: রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার মাটি ও পানিকে দূষিত করে।
  • পশুপালন: পশুখাদ্য ও ওষুধের অবশিষ্টাংশ পরিবেশে মিশে দূষিত করে।

চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য

  • ঔষধ ও রাসায়নিক পদার্থ: ঔষধ ও রাসায়নিকের অবশিষ্টাংশ, ব্যবহৃত সরঞ্জাম ইত্যাদি বিপজ্জনক বর্জ্য তৈরি করে।
  • জীবাণুনাশক: জীবাণুনাশক ও রোগ নির্ণয়ের রাসায়নিক পদার্থ পরিবেশে মুক্তি পেলে বিপজ্জনক হতে পারে।

ঘরবাড়ি বর্জ্য

  • ব্যাটারি, ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র, রঙ, পেইন্ট থিনার: ব্যাটারি, ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র, রঙ, পেইন্ট থিনার ইত্যাদি বিষাক্ত পদার্থ ধারণ করে যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।
  • ঔষধ: মেয়াদোত্তীর্ণ বা অপ্রয়োজনীয় ঔষধ পরিবেশে ফেলে দিলে বিপজ্জনক হতে পারে।

অন্যান্য বর্জ্য

  • বিদ্যুৎ কেন্দ্র: বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত ধোঁয়া ও ছাই পরিবেশে দূষিত করে।
  • বয়োজ্যাল পদার্থ: পুরনো যানবাহন, ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র ইত্যাদি বয়োজ্যাল হলে বিপজ্জনক উপাদান পরিবেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
  • ই-বর্জ্য: পুরানো কম্পিউটার, মোবাইল ফোন এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস ই-বর্জ্য তৈরি করে।

উল্লেখ্য যে, রাসায়নিক বর্জ্যের উৎস ও প্রকারভেদ বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলে ভিন্ন হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url