সান্দ্রতা কাকে বলে? সান্দ্রতার একক | সান্দ্রতার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ কর।

সান্দ্রতা কাকে বলে?

তরল পদার্থের অভ্যন্তরীণ ঘর্ষণের ফলে প্রবাহে বাধা দেবার প্রবণতাকে সান্দ্রতা বলা হয়।

যে ধর্মের জন্য প্রবাহী তার অভ্যন্তরস্থ বিভিন্ন স্তরের আপেক্ষিক বেগ রোধ করার চেষ্টা করে, তাকে ঐ প্রবাহীর সান্দ্রতা বলে। বিভিন্ন প্রবাহীর সান্দ্রতা বিভিন্ন হয়।

তরলের যে ধর্মের জন্য এর ভিতরের বিভিন্ন স্তরের আপেক্ষিক গতি বাধা পায় তাকে সান্দ্রতা (Viscosity) বলে।

যেমনঃ মধুর সান্দ্রতা পানি থেকে বেশি। এই আপেক্ষিক গতির ফলে তলগুলি একে অপরের উপর এক প্রকার ঘর্ষণ জাতীয় বাধা প্রদান করে যার ফলে এক তল থেকে আরেক তলে তরলের বিভিন্ন গভীরতায় প্রবাহবেগ সঞ্চারে আপেক্ষিক পার্থক্য থেকে যায়।

সান্দ্রতা বলের মান তরল পদর্থের সান্দ্রতাঙ্ক এবং গভীরতার সঙ্গে উপরোক্ত গতিপার্থক্য কত দ্রুত বদলায় তার দ্বারা পরিমাপ করা যায়।

আইজ্যাক নিউটন বলেন, সমান্তরাল সরলরৈখিক প্রবাহে বিভিন্ন তলের মধ্যে ব্যাবর্তন পীড়ন τ, গভীরতার সঙ্গে উপরোক্ত গতিপার্থক্য পরিবর্তনের হার, ∂u/∂y এর সমানুপাতিক।

τ = μ∂u/∂y

যেখানে, μ তরলের সান্দ্রতাঙ্ক।


সান্দ্রতার একক

সান্দ্রতার একক হচ্ছে Poise বা kg.m-1 s-1

সান্দ্রতা কেন প্রবাহী পদার্থে সৃষ্টি হয়? 

সান্দ্রতা সৃষ্টির কারণ হচ্ছে পদার্থের বিভিন্ন স্তরের মধ্যবর্তী আপেক্ষিক গতি। অর্থাৎ পদার্থের বিভিন্ন স্তরের মধ্যে আপেক্ষিক গতি বিদ্যমান থাকলে সান্দ্রতার উদ্ভব হয়। কঠিন পদার্থের বিভিন্ন স্তরের মধ্যে কোনো আপেক্ষিক গতি থাকে না। এ কারণে কঠিন পদার্থের সান্দ্রতা সৃষ্টি হয় না। একই কারণে স্থির প্রবাহী (তরল ও বায়বীয়) পদার্থে সান্দ্রতা বল ক্রিয়া করে না। প্রবাহী গতিশীল হলে বিভিন্ন স্তরের মধ্যে আপেক্ষিক গতি সৃষ্টি হয়। ফলে সান্দ্রতা বল ক্রিয়াশীল হয়। পদার্থের মধ্যে শুধু প্রবাহীই গতিশীল হতে পারে। এ কারণে প্রবাহী পদার্থে সান্দ্রতা সৃষ্টি হয়। 

সান্দ্রতার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ কর। 

১) বায়ুর সান্দ্রতাজনিত বাধা লক্ষ করেই গতিশীল নৌকা, ষ্টীমার, লঞ্চ, জাহাজের উপর পানির এবং গতিশীল মোটর গাড়ি ও বিমানের নকশা তৈরি হয়। 

২) সান্দ্রতা ধর্মের উপর ভিত্তি করেই ফাউনটেন পেন প্রস্তুত করা হয়। 

৩) এই ধর্মের উপর নির্ভর করে শিরা-উপশিরা দিয়ে রক্তের চলাচল হয়ে থাকে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url