আমদানি কাকে বলে? আমদানির কারণ ও প্রভাব

আমদানি কাকে বলে?

আমদানি বলতে মুদ্রার বিনিময়ে পণ্য সামগ্রী একটি জাতীয় সীমানার বাহ্যিক উৎস হতে সীমানার অভ্যন্তরে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে নিয়ে আসা বুঝানো হয়।

মানুষের চাহিদা এবং প্রয়োজন অপরিসীম এবং বৈচিত্র্যময়। মানুষের অপরিসীম ও বৈচিত্যময় চাহিদা ও প্রয়োজন পূরণের সকল পণ্য বা সেবা উৎপাদন ও বন্টন কোন দেশের পক্ষেই একক ভাবে সম্ভব নয়। তাই প্রয়োজন দেখা দেয় বিদেশ থেকে পণ্য বা সেবা আমদানির। 

আমদানি সম্পর্কে P. H. Collin বলেন যে, বিক্রিয়ের উদ্দেশ্যে বিদেশ থেকে দেশের মধ্যে পণ্য সামগ্রী ক্রয় করে আনা।

Y. P. Singh এবং M. Saeed বলেন যে, বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবহার করে অন্য দেশসমূহ থেকে পণ্য বা সেবাসমূহ ক্রয় করে আনাই হলো আমদানি।

কোন দেশ বা সে দেশের ব্যবসায়ী সমাজ যখন বিক্রিয়ের উদ্দেশ্যে বিদেশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় কোন পণ্য - দ্রব্য বা সেবাদি ক্রয় করে আনে, তখন তাকে আমদানি বলে। যে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এরূপ কাজ করে তাকে বলা হয় আমদানিকারক।

বিক্রিয়ের উদ্দেশ্যে বিদেশ থেকে যখন কোন পণ্য দ্রব্য বো সেবা ক্রয় করে আনা হয়, তাকে আমরা আমদানি বলে।

আমদানির কারণ

আমদানির কারণগুলি হল:

  • একটি দেশের ভোগ্যপণ্যের চাহিদা পূরণ করা।
  • একটি দেশের উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম আমদানি করা।
  • একটি দেশের শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশের জন্য প্রযুক্তি আমদানি করা।

আমদানির প্রভাবগুলি হল:

  • একটি দেশের ভোক্তা সুবিধা পায়।
  • একটি দেশের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।
  • একটি দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হয়।

বাংলাদেশে আমদানিকৃত পণ্যের মধ্যে রয়েছে:

  • তেল ও খনিজ জ্বালানী
  • কাঁচামাল
  • যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম
  • ভোগ্যপণ্য

বাংলাদেশের প্রধান আমদানিকৃত দেশগুলি হল:

  • চীন
  • ভারত
  • যুক্তরাষ্ট্র
  • সৌদি আরব
  • জাপান

আমদানি একটি দেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমদানি একটি দেশের ভোগ্যপণ্যের চাহিদা পূরণ করে, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে এবং অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

কিছু সাধারণ প্রশ্ন

১. আমদানি কাকে বলে?

একটি দেশ থেকে অন্য দেশে পণ্য বা সেবা ক্রয় করাকে আমদানি বলে।

২. আমদানির উদ্দেশ্য কী?

আমদানির উদ্দেশ্য হলো একটি দেশের প্রয়োজনীয় পণ্য বা সেবা বিদেশ থেকে সংগ্রহ করা। এটি একটি দেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি:

  • দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে।
  • দেশের শিল্প ও উৎপাদনকে প্রসারিত করে।
  • দেশের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করে।

৩. আমদানির প্রকারভেদ কী কী?

আমদানির প্রকারভেদ প্রধানত দুই প্রকার:

  • পণ্য আমদানি: কোনও নির্দিষ্ট পণ্য বিদেশ থেকে ক্রয় করাকে পণ্য আমদানি বলে।
  • সেবা আমদানি: কোনও নির্দিষ্ট সেবা বিদেশ থেকে ক্রয় করাকে সেবা আমদানি বলে।

৪. আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কী কী?

আমদানির জন্য নিম্নলিখিত কাগজপত্রগুলি প্রয়োজন:

  • আমদানি এলসি (Import Letter of Credit)
  • আমদানি লাইসেন্স (Import License)
  • আমদানি শুল্ক (Import Duty)
  • আমদানি ভ্যাট (Import VAT)
  • আমদানি নথিপত্র (Import Documents)

৫. আমদানির শুল্ক কী?

বিদেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর সরকার নির্ধারিত করকে আমদানি শুল্ক বলে।

৬. আমদানির ভ্যাট কী?

বিদেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর সরকার নির্ধারিত করকে আমদানি ভ্যাট বলে।

৭. আমদানির নথিপত্র কী কী?

আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলিকে আমদানি নথিপত্র বলে। আমদানি নথিপত্রগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • বিল অফ এন্ট্রি (Bill of Entry)
  • বিল অফ lading (Bill of Lading)
  • ইনভয়েস (Invoice)
  • কনসাইনমেন্ট নোট (Consignment Note)
  • সার্টিফিকেট অফ অরিজিন (Certificate of Origin)
  • সার্টিফিকেট অফ কনফরমিটি (Certificate of Conformity)

৮. আমদানির নীতি কী?

একটি দেশের আমদানি নীতি নির্ধারণ করে সেই দেশের সরকার। আমদানি নীতির মাধ্যমে সরকার আমদানির পরিমাণ, ধরন এবং শর্তগুলি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

৯. আমদানির সুবিধা কী কী?

আমদানির সুবিধাগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করা
  • দেশের শিল্প ও উৎপাদনকে প্রসারিত করা
  • দেশের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করা
  • দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা

১০. আমদানির অসুবিধা কী কী?

আমদানির অসুবিধাগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে পারে।
  • দেশের শিল্প ও উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
  • দেশের কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়তে পারে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url