কাতিলা (Katila Gum) গামের উপকারিতা

কাতিলা গামের উপকারিতা

কাতিলা গাম, যা Tragacanth gum নামেও পরিচিত, এক ধরণের ভেষজ যা বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানে ব্যবহৃত হয়। এর কিছু উল্লেখযোগ্য উপকারিতা হল:

১) শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি: কাতিলা গামে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, প্রোটিন এবং ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ থাকে যা শরীরে শক্তির যোগান দেয় এবং ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।

২) হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ: কাতিলা গামে থাকা ইলেক্ট্রোলাইট, বিশেষ করে পটাশিয়াম, গরমের সময় শরীরের পানিশূন্যতা রোধে এবং হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে সাহায্য করে।

কাতিলা (Katila Gum)

৩) কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণ: কাতিলা গামের উচ্চ ফাইবার সামগ্রী হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।

৪) গর্ভবতী মায়ের পুষ্টি: কাতিলা গাম গর্ভবতী মায়েদের জন্য একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। এতে থাকা ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ গর্ভের শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশে সাহায্য করে।

৫) হাত ও পায়ে জ্বালাভাব দূর করতে: কাতিলা গামের শীতল প্রভাব হাত ও পায়ের জ্বালাভাব দূর করতে সাহায্য করে।

৬) ওজন কমাতে: কাতিলা গামে থাকা ফাইবার দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।

৭) চকচকে ত্বক পেতে: কাতিলা গামে থাকা ভিটামিন 'এ' ত্বকের জন্য খুব উপকারী। এটি ত্বককে উজ্জ্বল ও মসৃণ করে তোলে।

৮) ইমিউন সিস্টেমের উন্নতি: কাতিলা গামে থাকা ভিটামিন সি ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

৯) পুরুষদের মধ্যে লিবিডো উন্নত করতে: কাতিলা গাম পুরুষদের মধ্যে লিবিডো বা যৌন আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

১০) ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে: কাতিলা গাম রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

কাতিলা গাম কখন খেতে হয়?

কাতিলা গাম বিভিন্ন সময়ে খাওয়া যেতে পারে, তবে এর সর্বোত্তম সময় নির্ভর করে আপনি এর কোন উপকারিতা পেতে চান তার উপর:

শারীরিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য:

  • সকালে: খালি পেটে কাতিলা গাম পানিতে ভিজিয়ে খেলে সারাদিনের জন্য শক্তি ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
  • ব্যায়ামের আগে: ব্যায়ামের 30 মিনিট আগে কাতিলা গাম খেলে শরীরে শক্তি সরবরাহ বৃদ্ধি পায় এবং ব্যায়ামের কর্মক্ষমতা উন্নত হয়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য:

  • রাতে: ঘুমাতে যাওয়ার আগে কাতিলা গাম খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

যৌন শক্তি বৃদ্ধির জন্য:

  • সকালে ও রাতে: নিয়মিত সকালে ও রাতে কাতিলা গাম খেলে যৌন শক্তি বৃদ্ধি পায়।

পেশি বৃদ্ধির জন্য:

  • ব্যায়ামের পর: ব্যায়ামের পর কাতিলা গাম খেলে পেশির বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

কাতিলা গাম খাওয়ার নিয়ম

  • কাতিলা গাম দুধ, পানি অথবা রসের সাথে মিশিয়ে খাওয়া হয়।
  • প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১ চা চামচ কাতিলা গাম খাওয়া যেতে পারে।
  • গর্ভবতী মায়েদের প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১/২ চা চামচ কাতিলা গাম খাওয়া যেতে পারে।

কাতিলা গাম কেন খায়?

কাতিলা গাম শরীরের জন্য অনেক উপকারী তাই এটি খাওয়া হয়।

প্রথমত, এটি শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। গ্রীষ্মের সময় এটি খুবই উপকারী।

দ্বিতীয়ত, কাতিলা গাম প্রোটিন এবং ফলিক অ্যাসিডের একটি ভালো উৎস। এটি দেহের স্বাস্থ্য-পরিস্থিতি ভালো রাখে।

তৃতীয়ত, এটি হজমশক্তি বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।

চতুর্থত, কাতিলা গাম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

পঞ্চমত, এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে।

কাতিলা গাম খাওয়ার অপকারিতা

১. হজমে সমস্যা: কাতিলা গামে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা অতিরিক্ত খাওয়া হলে হজমে সমস্যা, পেট ফাঁপা, এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ হতে পারে।

২. ওজন বৃদ্ধি: কাতিলা গামে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি থাকে। অতিরিক্ত খাওয়া হলে ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।

৩. দাঁতের ক্ষতি: কাতিলা গামে চিনি থাকে, যা দাঁতের ক্ষয়ের কারণ হতে পারে।

৪. পুষ্টির ঘাটতি: কাতিলা গামে পুষ্টির পরিমাণ খুব কম থাকে। অতিরিক্ত খাওয়া হলে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

৫. অ্যালার্জি: কিছু লোকের কাতিলা গামের প্রতি অ্যালার্জি থাকতে পারে। অ্যালার্জির লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে চুলকানি, ফোলাভাব, এবং শ্বাসকষ্ট।

কাতিলা গাম কোথায় পাওয়া যায়?

কাতিলা গাম স্থানীয় বাজারে ও অনলাইনে পাওয়া যায়।

কাতিলা গাম ব্যবহারের সাবধানতা

  • যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের কাতিলা গাম খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
  • গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের কাতিলা গাম খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
  • অতিরিক্ত কাতিলা গাম খাওয়া উচিত নয়।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url