পরমাণুর গঠনের ভিত্তিতে কোনো বস্তুর আহিত হওয়ার ঘটনা ব্যাখ্যা কর।

পরমাণুর গঠনের ভিত্তিতে কোনো বস্তুর আহিত হওয়ার ঘটনা ব্যাখ্যা কর।

পরমাণুর গঠনের ভিত্তিতে কোনো বস্তুর আহিত হওয়ার ঘটনা ব্যাখ্যা করা হলো:

পরমাণু হলো পদার্থের মৌলিক একক। একটি পরমাণুতে তিন ধরনের মৌলিক কণা থাকে: প্রোটন, নিউট্রন এবং ইলেকট্রন। প্রোটন এবং নিউট্রন থাকে পরমাণুর কেন্দ্রে, যাকে নিউক্লিয়াস বলা হয়। ইলেকট্রনগুলি নিউক্লিয়াসের চারপাশে ঘোরে।

প্রোটনের আধান ধনাত্মক, নিউট্রনের আধান শূন্য এবং ইলেকট্রনের আধান ঋণাত্মক। একটি পরমাণুতে প্রোটনের সংখ্যা নিউট্রনের সংখ্যার সমান হলে, পরমাণুটি নিরপেক্ষ হয়। যদি প্রোটনের সংখ্যা নিউট্রনের সংখ্যার চেয়ে বেশি হয়, তাহলে পরমাণুটি ধনাত্মক আধানে আহিত হয়। যদি প্রোটনের সংখ্যা নিউট্রনের সংখ্যার চেয়ে কম হয়, তাহলে পরমাণুটি ঋণাত্মক আধানে আহিত হয়।

কোনো বস্তুর আহিত হওয়ার ঘটনা ঘটে যখন একটি বস্তু থেকে অন্য একটি বস্তুর দিকে ইলেকট্রন স্থানান্তরিত হয়। যে বস্তু থেকে ইলেকট্রন চলে যায়, সেই বস্তুটি ধনাত্মক আধানে আহিত হয় এবং যে বস্তুতে ইলেকট্রন আসে, সেই বস্তুটি ঋণাত্মক আধানে আহিত হয়।

স্থির বিদ্যুৎ তৈরির দুটি প্রধান উপায় হলো ঘর্ষণ এবং আবেশ।

ঘর্ষণ

ঘর্ষণের মাধ্যমে স্থির বিদ্যুৎ তৈরি হলে, এক ধরনের পদার্থের উপর অন্য ধরনের পদার্থ ঘষলে তাদের মধ্যে কিছু ইলেকট্রনের আদান-প্রদান হয়। যে পদার্থের উপর ঘষা হয়, সেই পদার্থে অতিরিক্ত ইলেকট্রন জমা হয় এবং যে পদার্থ দিয়ে ঘষা হয়, সেই পদার্থ থেকে কিছু ইলেকট্রন চলে যায়।

উদাহরণস্বরূপ, কাঁচের দণ্ডকে পশমের সাথে ঘষলে কাঁচের দণ্ডের উপর অতিরিক্ত ইলেকট্রন জমা হয় এবং পশমের উপর কিছু ইলেকট্রন চলে যায়। ফলে কাঁচের দণ্ডটি ধনাত্মক আধানে আহিত হয় এবং পশমটি ঋণাত্মক আধানে আহিত হয়।

আবেশ

আবেশের মাধ্যমে স্থির বিদ্যুৎ তৈরি হলে, একটি আহিত বস্তুকে অন্য একটি নিরপেক্ষ বস্তুের কাছে আনলে নিরপেক্ষ বস্তুতে আধানের আবেশ ঘটে। আহিত বস্তু থেকে কিছু ইলেকট্রন নিরপেক্ষ বস্তুর উপর আবেশিত হয়।

উদাহরণস্বরূপ, একটি ধনাত্মক আহিত বস্তুকে একটি নিরপেক্ষ কাগজের টুকরোতে আনলে কাগজের টুকরোটিতে কিছু ঋণাত্মক ইলেকট্রন আবেশিত হয়। ফলে কাগজের টুকরোটি ধনাত্মক আধানে আহিত হয়।

পরমাণুর গঠনের ভিত্তিতে উপরের আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে, কোনো বস্তুর আহিত হওয়ার ঘটনাটি আসলে ইলেকট্রনের আদান-প্রদানের উপর ভিত্তি করে ঘটে।