রক্তের উপাদানগুলো কি কি?

রক্তের উপাদানগুলো কি কি?

রক্ত হলো দেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ তরল যা দেহের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন, পুষ্টি, হরমোন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পরিবহণ করে। রক্তের প্রধান উপাদানগুলো হলো:

  • প্লাজমা: রক্তের তরল অংশকে প্লাজমা বলে। এটি রক্তের প্রায় ৫৫% অংশ। প্লাজমা মূলত জল দিয়ে তৈরি, তবে এতে প্রোটিন, গ্লুকোজ, খনিজ আয়ন, হরমোন, কার্বন ডাই অক্সাইড, এবং অন্যান্য উপাদানও থাকে।
  • লোহিত রক্তকণিকা: লোহিত রক্তকণিকা দেহের অক্সিজেন পরিবহণের জন্য দায়ী। এগুলোতে হিমোগ্লোবিন নামক একটি রঞ্জক পদার্থ থাকে যা অক্সিজেনকে আবদ্ধ করে।
  • শ্বেত রক্তকণিকা: শ্বেত রক্তকণিকা দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা রক্ষার জন্য দায়ী। এগুলো বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং অন্যান্য ক্ষতিকর জীবাণু ধ্বংস করে।
  • অণুচক্রিকা: অণুচক্রিকা রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। এগুলো রক্তপাত বন্ধ করতে এবং ক্ষতস্থান নিরাময় করতে সহায়তা করে।

রক্তের এই উপাদানগুলো একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাতে দেহ সঠিকভাবে কাজ করতে পারে।

এখানে রক্তের উপাদানগুলোর আরও বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হলো:

প্লাজমা

প্লাজমা রক্তের তরল অংশ যা দেহের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন, পুষ্টি, হরমোন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পরিবহণ করে। এটি মূলত জল দিয়ে তৈরি, তবে এতে প্রোটিন, গ্লুকোজ, খনিজ আয়ন, হরমোন, কার্বন ডাই অক্সাইড, এবং অন্যান্য উপাদানও থাকে।

প্লাজমার প্রোটিনের মধ্যে রয়েছে অ্যালবুমিন, গ্লোবুলিন এবং ফাইব্রিনোজেন। অ্যালবুমিন রক্তের আয়তন নিয়ন্ত্রণ করে এবং পানিকে রক্তের মধ্যে রাখতে সাহায্য করে। গ্লোবুলিন বিভিন্ন ধরনের কাজ করে, যেমন দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা, রক্তের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা এবং বিভিন্ন হরমোন পরিবহণ করা। ফাইব্রিনোজেন রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।

লোহিত রক্তকণিকা

লোহিত রক্তকণিকা দেহের অক্সিজেন পরিবহণের জন্য দায়ী। এগুলোতে হিমোগ্লোবিন নামক একটি রঞ্জক পদার্থ থাকে যা অক্সিজেনকে আবদ্ধ করে। লোহিত রক্তকণিকা অক্সিজেনকে ফুসফুস থেকে শরীরের অন্যান্য অংশে এবং কার্বন ডাই অক্সাইডকে শরীরের অন্যান্য অংশ থেকে ফুসফুসে পরিবহণ করে।

লোহিত রক্তকণিকাগুলো হিমোগ্লোবিন নামক একটি প্রোটিন দিয়ে তৈরি। হিমোগ্লোবিন অক্সিজেনের সাথে আবদ্ধ হওয়ার জন্য একটি আয়রন-সমৃদ্ধ অংশ আছে। যখন লোহিত রক্তকণিকা ফুসফুসে পৌঁছায়, তখন এগুলো অক্সিজেন দিয়ে পরিপূর্ণ হয়। অক্সিজেনযুক্ত লোহিত রক্তকণিকা তখন শরীরের অন্যান্য অংশে প্রবাহিত হয়।

লোহিত রক্তকণিকাগুলোর আয়ুস্কাল মাত্র ১২০ দিন। এগুলো ধীরে ধীরে অস্থি মজ্জায় ধ্বংস হয়ে যায়।

শ্বেত রক্তকণিকা

শ্বেত রক্তকণিকা দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা রক্ষার জন্য দায়ী। এগুলো বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং অন্যান্য ক্ষতিকর জীবাণু ধ্বংস করে।

শ্বেত রক্তকণিকার মধ্যে রয়েছে নিউট্রোফিল, ইওসিনোফিল, বেসোফিল, লিম্ফোসাইট এবং মনোসাইট। নিউট্রোফিল হলো দেহের সবচেয়ে বেশি পরিমাণে পাওয়া শ্বেত রক্তকণিকা

আরো পড়ুনঃ কলয়েড কি? কলয়েডের ধরন, কলয়েডগুলির বৈশিষ্ট্য

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url