তড়িৎ বলরেখা কাকে বলে?

তড়িৎ বলরেখা কাকে বলে?

তড়িৎক্ষেত্রে একটি মুক্ত ধনাত্মক আধান স্থাপন করলে এটি যে পথে পরিভ্রমণ করে তাকে তড়িৎ বলরেখা বলে।


তড়িৎ বলরেখা (Electric Lines of Force)

দুটি আধান পরস্পরকে বল প্রয়োগ করে। এই বল কিভাবে ক্রিয়া করে তা ব্যাখ্যা করার জন্য ফ্যারাডে সর্বপ্রথম বলরেখার ধারণা দেন। বলরেখাগুলো ফ্যারাডের কাল্পনিক রেখা। বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্ব নেই। কোনো তড়িৎ ক্ষেত্রে একটি অতি ক্ষুদ্র ধনাত্মক আধান রাখলে আধানটি এক প্রকার বল অনুভব করে এবং এ বলের প্রভাবে ক্ষুদ্র আধানটি গতিশীল হয়।

তড়িৎ ক্ষেত্রে একটি মুক্ত ধনাত্মক আধান রাখলে আধানটি যে পথে গতিশীল হয় সেই পথকে তড়িৎ বলরেখা বলে।

আসলে কোনো তড়িৎ ক্ষেত্রের বিভিন্ন বিন্দু দিয়ে যদি এমন একটি রেখা কল্পনা করা যায় যে, ঐ রেখার যেকোনো বিন্দুতে স্পর্শক টানলে সেই স্পর্শক ঐ বিন্দুতে মোট প্রাবল্যের অভিমুখ নির্দেশ করে, তাহলে ঐ রেখাকে বলরেখা বলে। 

তড়িৎগ্রস্থ বস্তুর চারিপার্শ্বে এবং তড়িৎ ক্ষেত্রের মধ্যে এমন অসংখ্য বল রেখা টানা যেতে পারে।

বলরেখাগুলো দিয়ে ফ্যারাডে দুটি আধানের মধ্যে আকর্ষণ ও বিকর্ষণ সুন্দর ভাবে ব্যাখ্যা করেন। পরবর্তীতে বলরেখাগুলো তড়িৎ ক্ষেত্র ব্যাখ্যা করার জন্যও ব্যবহৃত হয়ে আসছে। 

সুতরাং তড়িৎ ক্ষেত্রকে বুঝানোর জন্য তড়িৎ বলরেখা কল্পনা করা হয়। পরে ম্যাক্সওয়েল এ বিষয় বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন।

এই কাল্পনিক তড়িৎ বলরেখাগুলির নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।

  • তড়িৎ বলরেখাগুলো বক্ররেখা এবং ধনাত্মক আধানের পৃষ্ঠ থেকে লম্বভাবে নির্গত হয়ে ঋণাত্মক আধানের পৃষ্ঠে লম্বভাবে আপতিত হয়।
  • এরা কখনো পরস্পরকে ছেদ করেনা।
  • এই বলরেখাগুলো স্থিতিস্থাপক সুতার ন্যায় আচরণ করে এবং দৈর্ঘ্য বরাবর সংকুচিত হতে চায়।
  • এই বলরেখাগুলো পরস্পরের উপর পার্শ্বচাপ প্রয়োগ করে।
  • শূন্য বা বায়ু মাধ্যমে 1C আধান থেকে 1/ε∘ সংখ্যক বলরেখা নির্গত হয়।



তড়িৎ বলরেখার বিভিন্ন চিত্র দেখানো হয়েছে। ক-চিত্রে ধনাত্মক আধান থেকে বলরেখা নির্গত হচ্ছে। খ-চিত্রে ঋণাত্মক আধানে আপতিত হচ্ছে। গ-চিত্রে দুটি বিপরীতধর্মী আধানে বলরেখা দিয়ে আকর্ষণ দেখানো হয়েছে এবং ঘ-চিত্রে দুটি সমধর্মী আধানে বলরেখা দিয়ে বিকর্ষণ দেখানো হয়েছে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url