ঘনীভবন কাকে বলে? উদাহরণ, গুরুত্ব ও শর্ত
ঘনীভবন কাকে বলে?
জলীয় বাষ্পকে ঘনীভূত করে তরলে পরিণত হওয়াকে ঘনীভবন বলে।
ঘনীভবন হলো গ্যাসীয় থেকে পদার্থের অবস্থাকে তরল পর্যায়ে পরিবর্তন করা এবং এটি বাষ্পীভবনের বিপরীত প্রক্রিয়া।
কোনো বাষ্পকে শীতল করে তা তরলে পরিণত করার প্রক্রিয়াকে ঘনীভবন বলে। যেমন - জলীয় বাষ্প তাপশক্তি নির্গত করে ঠাণ্ডা হয়ে পানিতে পরিণত হয়। এটি একটি ঘনীভবন প্রক্রিয়া।
ঘনীভবন তার বায়বীয় শক্তির মধ্যে বৃষ্টির ফোটা বা মেঘের তুষারের গঠন করে। বায়বীয় পর্যায়ে এবং তরল বা কঠিন পৃষ্ঠের সংস্পর্শে এই প্রজাতির পারমাণবিক / আণবিকগুচ্ছ গঠনের মাধ্যমে সূচনা করা হয়। মেঘের মধ্যে এটিকে জল-নিউক্লিয়েটিং প্রোটিন দিয়ে অনুঘটক করা যায়। এটি বায়ুমণ্ডলীয় জীবাণু দ্বারা তৈরি।
ঘনীভবনের উদাহরণ
ঘনীভবনের অনেক উদাহরণ রয়েছে। এখানে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ দেওয়া হল:
- বৃষ্টি: যখন বায়ুমণ্ডলে থাকা জলীয় বাষ্প শীতল হয়ে যায়, তখন তা তরল জলে পরিণত হয়। এই তরল জল বায়ুমণ্ডল থেকে মাটিতে নেমে আসে বৃষ্টির আকারে।
- তুষার: যখন বায়ুমণ্ডলে থাকা জলীয় বাষ্প খুব ঠান্ডা হয়ে যায়, তখন তা কঠিন জলে পরিণত হয়। এই কঠিন জল বায়ুমণ্ডল থেকে মাটিতে নেমে আসে তুষারের আকারে।
- শিশির: যখন রাতের বেলা বায়ুমণ্ডল ঠান্ডা হয়ে যায়, তখন বাতাসে থাকা জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে ঘাস, গাছপালা এবং অন্যান্য বস্তুতে জলের ফোঁটা আকারে জমে থাকে। এই জলের ফোঁটাকে শিশির বলা হয়।
- কুয়াশা: যখন বায়ুমণ্ডল খুব আর্দ্র হয় এবং তাপমাত্রা স্যাঁতসেঁতে থাকে, তখন বাতাসে থাকা জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে কুয়াশার আকারে দেখা দেয়।
- মেঘ: মেঘগুলিও ঘনীভবনের একটি উদাহরণ। বায়ুমণ্ডলে থাকা জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে মেঘের আকারে দেখা দেয়।
এই ছাড়াও, ঘনীভবন বিভিন্ন শিল্প প্রক্রিয়াতেও ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ওয়াইন তৈরির সময়, ঘনীভবন ওয়াইনের স্বাদ এবং গন্ধ উন্নত করতে ব্যবহৃত হয়।
ঘনীভবনের গুরুত্ব
ঘনীভবনের জন্য কোন শর্তগুলি প্রয়োজন?
ঘনীভবনের জন্য দুটি প্রধান শর্ত প্রয়োজন:
- জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি: ঘনীভবনের জন্য বাতাসে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি প্রয়োজন। বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণকে আর্দ্রতা বলা হয়।
- তাপমাত্রার হ্রাস: ঘনীভবনের জন্য বাতাসের তাপমাত্রা কমে যাওয়া প্রয়োজন। বাতাসের তাপমাত্রা যত কম হবে, ঘনীভবনের সম্ভাবনা তত বেশি হবে।
ঘনীভবনের হার কী দ্বারা প্রভাবিত হয়?
ঘনীভবনের হার বাতাসের তাপমাত্রা, আর্দ্রতা এবং পৃষ্ঠের প্রকৃতির উপর নির্ভর করে।
- তাপমাত্রা: তাপমাত্রা যত কম হবে, ঘনীভবনের হার তত বেশি হবে। এটি কারণ তাপমাত্রা কম হলে বাতাসে থাকা জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমে যায়।
- আর্দ্রতা: আর্দ্রতা যত বেশি হবে, ঘনীভবনের হার তত বেশি হবে। এটি কারণ আর্দ্র বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে।
- পৃষ্ঠের প্রকৃতি: পৃষ্ঠের প্রকৃতি ঘনীভবনের হারকে প্রভাবিত করতে পারে। যে পৃষ্ঠগুলি জলীয় বাষ্পের সাথে সহজেই সংযুক্ত হতে পারে সেগুলিতে ঘনীভবনের হার বেশি হয়। উদাহরণস্বরূপ, কাঁচের পৃষ্ঠে ঘনীভবনের হার ধাতুর পৃষ্ঠের চেয়ে বেশি হয়।