অপটিক্যাল ফাইবার কাকে বলে? কত প্রকার, সুবিধা ও অসুবিধা

অপটিক্যাল ফাইবার কাকে বলে?

অপটিক্যাল ফাইবার হলো কাচ বা প্লাস্টিকের খুব সরু, দীর্ঘ নমনীয় অথচ নিরেট ফাইবার বা তন্তু। এই ফাইবারের পদার্থের প্রতিসরাঙ্ক 1.7 এবং ফাইবারের ওপর অপেক্ষাকৃত কম প্রতিসরাঙ্কের (1.5) পদার্থের একটি আবরণ দেওয়া হয়। ফাইবারের এক প্রান্ত ক্ষুদ্র কোণে আপতিত আলোক রশ্মি ফাইবারের ভেতরে বারবার পূর্ণ অভ্যন্তরীণভাবে প্রতিফলিত হয়ে শেষ পর্যন্ত অন্য প্রান্ত দিয়ে বেরিয়ে যায়।

অপটিক্যাল ফাইবার কত প্রকার?

অপটিক্যাল ফাইবার প্রধানত দুই প্রকার:

  • কাচের অপটিক্যাল ফাইবার: এই ফাইবারগুলো সাধারণত সিলিকন ডাইঅক্সাইড দিয়ে তৈরি করা হয়। কাচের অপটিক্যাল ফাইবারগুলো পোলারাইজড আলো বহন করে।
  • প্লাস্টিকের অপটিক্যাল ফাইবার: এই ফাইবারগুলো সাধারণত পলিথিন টেট্রাফ্লুওরোইথিলিন (PTFE) দিয়ে তৈরি করা হয়। প্লাস্টিকের অপটিক্যাল ফাইবারগুলো অপোলারাইজড আলো বহন করে।

অপটিক্যাল ফাইবার এর সুবিধা

অপটিক্যাল ফাইবারের অনেক সুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

  • লম্বা দুরত্বে তথ্য পরিবহন: অপটিক্যাল ফাইবার দিয়ে লম্বা দুরত্বে অনেক কম সময়ে বিপুল পরিমাণ তথ্য পরিবহন করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে 100 গিগাবাইট/সেকেন্ডের গতিতে তথ্য পরিবহন করা সম্ভব।
  • তথ্য ক্ষয় কম: অপটিক্যাল ফাইবার দিয়ে পরিবাহিত তথ্যের ক্ষতি খুবই কম। উদাহরণস্বরূপ, 100 কিলোমিটার দূরত্বে অপটিক্যাল ফাইবার দিয়ে পরিবাহিত তথ্যের ক্ষতি মাত্র 0.001%।
  • বিদ্যুৎপ্রবাহের জন্য নিরাপদ: অপটিক্যাল ফাইবার বিদ্যুৎপ্রবাহের জন্য নিরাপদ। এ কারণে এটিকে বিদ্যুৎ পরিবহনের জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • পরিবেশবান্ধব: অপটিক্যাল ফাইবার পরিবেশবান্ধব। এটি তৈরিতে কোনো ক্ষতিকর পদার্থ ব্যবহার হয় না।

অপটিক্যাল ফাইবারের অন্যান্য সুবিধাগুলো হল:

  • অপটিক্যাল ফাইবার দিয়ে বিভিন্ন ধরনের তথ্য পরিবহন করা যায়, যেমন: টেলিভিশন, ইন্টারনেট, ফোন, ডাটা পরিবহন ইত্যাদি।
  • অপটিক্যাল ফাইবার দিয়ে মাল্টিমিডিয়া তথ্য পরিবহন করা যায়, যেমন: ভিডিও, অডিও, ইমেজ ইত্যাদি।
  • অপটিক্যাল ফাইবার দিয়ে উচ্চ-মানের ছবি ও ভিডিও পরিবহন করা যায়।

অপটিক্যাল ফাইবার এর অসুবিধা

অপটিক্যাল ফাইবার একটি আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা। এর অনেক সুবিধা থাকলেও কিছু অসুবিধাও রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

  • উচ্চ ব্যয়: অপটিক্যাল ফাইবার তৈরি করা ব্যয়বহুল। এ কারণে এটিকে ছোট আকারের যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যবহার করা কঠিন।
  • মেরামত করা কঠিন: অপটিক্যাল ফাইবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে মেরামত করা কঠিন। এ কারণে এটিকে এমন স্থানে ব্যবহার করা উচিত যেখানে ক্ষতির সম্ভাবনা কম।
  • বাঁকানো কঠিন: অপটিক্যাল ফাইবারকে U আকারে বাঁকানো যায় না। এ কারণে এটিকে এমন স্থানে ব্যবহার করা উচিত যেখানে বাঁকাতে হবে না।
  • ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বিকিরণের প্রতি সংবেদনশীল: অপটিক্যাল ফাইবার ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বিকিরণের প্রতি সংবেদনশীল। এ কারণে এটিকে এমন স্থানে ব্যবহার করা উচিত যেখানে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বিকিরণ থেকে রক্ষা করা সম্ভব।
  • প্রযুক্তিগত জ্ঞান প্রয়োজন: অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দক্ষ ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন জনবল প্রয়োজন।
  • পরিবেশগত প্রভাব: অপটিক্যাল ফাইবার তৈরিতে কিছু পরিবেশগত প্রভাব রয়েছে। তবে এটি অন্যান্য যোগাযোগ ব্যবস্থার তুলনায় কম পরিবেশ দূষণ করে।

অপটিক্যাল ফাইবার সম্পর্কে FAQ

১। অপটিক্যাল ফাইবার কাকে বলে?

অপটিক্যাল ফাইবার হল একধরনের পাতলা, স্বচ্ছ তন্তু বিশেষ, যা সাধারণত বিশুদ্ধ কাচ বা প্লাস্টিক দিয়ে বানানো হয়। অপটিক্যাল ফাইবার দিয়ে আলো পরিবহন করা হয়। ফাইবার অপটিকস ফলিত বিজ্ঞান ও প্রকৌশলের সেই শাখা যা এই অপটিক্যাল ফাইবারের বিষয়ে আলোচনা করে।

২। অপটিক্যাল ফাইবার কত প্রকার?

অপটিক্যাল ফাইবার প্রধানত দুই প্রকার:

  • কাচের অপটিক্যাল ফাইবার: এই ফাইবারগুলো সাধারণত সিলিকন ডাইঅক্সাইড দিয়ে তৈরি করা হয়। কাচের অপটিক্যাল ফাইবারগুলো পোলারাইজড আলো বহন করে।
  • প্লাস্টিকের অপটিক্যাল ফাইবার: এই ফাইবারগুলো সাধারণত পলিথিন টেট্রাফ্লুওরোইথিলিন (PTFE) দিয়ে তৈরি করা হয়। প্লাস্টিকের অপটিক্যাল ফাইবারগুলো অপোলারাইজড আলো বহন করে।

৩। অপটিক্যাল ফাইবারের সুবিধা কী কী?

অপটিক্যাল ফাইবারের অনেক সুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

  • লম্বা দুরত্বে তথ্য পরিবহন: অপটিক্যাল ফাইবার দিয়ে লম্বা দুরত্বে অনেক কম সময়ে বিপুল পরিমাণ তথ্য পরিবহন করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে 100 গিগাবাইট/সেকেন্ডের গতিতে তথ্য পরিবহন করা সম্ভব।
  • তথ্য ক্ষয় কম: অপটিক্যাল ফাইবার দিয়ে পরিবাহিত তথ্যের ক্ষতি খুবই কম। উদাহরণস্বরূপ, 100 কিলোমিটার দূরত্বে অপটিক্যাল ফাইবার দিয়ে পরিবাহিত তথ্যের ক্ষতি মাত্র 0.001%।
  • বিদ্যুৎপ্রবাহের জন্য নিরাপদ: অপটিক্যাল ফাইবার বিদ্যুৎপ্রবাহের জন্য নিরাপদ। এ কারণে এটিকে বিদ্যুৎ পরিবহনের জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • পরিবেশবান্ধব: অপটিক্যাল ফাইবার পরিবেশবান্ধব। এটি তৈরিতে কোনো ক্ষতিকর পদার্থ ব্যবহার হয় না।

৪। অপটিক্যাল ফাইবারের অসুবিধা কী কী?

অপটিক্যাল ফাইবারের কিছু অসুবিধাও রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

  • উচ্চ ব্যয়: অপটিক্যাল ফাইবার তৈরি করা ব্যয়বহুল। এ কারণে এটিকে ছোট আকারের যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যবহার করা কঠিন।
  • মেরামত করা কঠিন: অপটিক্যাল ফাইবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে মেরামত করা কঠিন। এ কারণে এটিকে এমন স্থানে ব্যবহার করা উচিত যেখানে ক্ষতির সম্ভাবনা কম।
  • বাঁকানো কঠিন: অপটিক্যাল ফাইবারকে U আকারে বাঁকানো যায় না। এ কারণে এটিকে এমন স্থানে ব্যবহার করা উচিত যেখানে বাঁকাতে হবে না।
  • ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বিকিরণের প্রতি সংবেদনশীল: অপটিক্যাল ফাইবার ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বিকিরণের প্রতি সংবেদনশীল। এ কারণে এটিকে এমন স্থানে ব্যবহার করা উচিত যেখানে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বিকিরণ থেকে রক্ষা করা সম্ভব।
  • প্রযুক্তিগত জ্ঞান প্রয়োজন: অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দক্ষ ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন জনবল প্রয়োজন।
  • পরিবেশগত প্রভাব: অপটিক্যাল ফাইবার তৈরিতে কিছু পরিবেশগত প্রভাব রয়েছে। তবে এটি অন্যান্য যোগাযোগ ব্যবস্থার তুলনায় কম পরিবেশ দূষণ করে।

৫। অপটিক্যাল ফাইবার কিভাবে কাজ করে?

অপটিক্যাল ফাইবার দিয়ে তথ্য পরিবহনের জন্য আলোর ব্যবহার করা হয়। অপটিক্যাল ফাইবারের কেন্দ্রীয় অংশকে বলা হয় কোর। কোরের চারপাশের অংশকে বলা হয় Cladding। কোরের আলোর প্রতিসরণ সূচক Cladding এর প্রতিসরণ সূচকের চেয়ে বেশি।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url