রাসায়নিক সাম্যাবস্থা কাকে বলে?

রাসায়নিক সাম্যাবস্থা কাকে বলে?

যখন কোনো উভমুখী বিক্রিয়ায় সম্মুখ বিক্রিয়ার গতিবেগ বিপরীতমুখী বিক্রিয়ার গতিবেগের সমান হয় তখন সে অবস্থাকে রাসায়নিক সাম্যাবস্থা বলে।

রাসায়নিক সাম্যাবস্থা হল রাসায়নিক প্রক্রিয়ার এমন একটি পরিস্থিতি যাতে বিক্রিয়ক ও উৎপাদের পরিমাণের মাত্রা অপরিবর্তিত থাকে। সাধারণত এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যখন সম্মুখ বিক্রিয়ার গতিবেগ, পশ্চাৎ বিক্রিয়ার গতিবেগের সমান থাকে। এ অবস্থায় সম্মুখ ও পশ্চাৎ বিক্রিয়ার হার শূন্য না হলেও অর্থাৎ বিক্রিয়া বন্ধ না থাকলেও বিক্রিয়ক ও উৎপাদ একই পরিমাণে তৈরি হওয়ার জন্য এদের স্থির বলে মনে হয়।

রাসায়নিক সাম্যাবস্থাকে নিম্নলিখিতভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায়:

  • সাম্যাবস্থা হল একটি গতিশীল অবস্থা। অর্থাৎ, সম্মুখ ও পশ্চাৎ বিক্রিয়া উভয়ই চলমান থাকে।
  • সাম্যাবস্থায় বিক্রিয়াক ও উৎপাদের পরিমাণের মাত্রা অপরিবর্তিত থাকে।
  • সাম্যাবস্থায় সম্মুখ ও পশ্চাৎ বিক্রিয়ার হার সমান থাকে।

রাসায়নিক সাম্যাবস্থার উদাহরণ:

নাইট্রোজেন ও হাইড্রোজেন থেকে অ্যামোনিয়া উৎপাদন বিক্রিয়া:

N₂(g) + 3H₂(g) ⇌ 2NH₃(g)

এই বিক্রিয়াটি একটি উভমুখী বিক্রিয়া। এটিকে সাম্যাবস্থায় পৌঁছাতে সময় লাগে। সাম্যাবস্থায়, বিক্রিয়াক ও উৎপাদের পরিমাণের মাত্রা অপরিবর্তিত থাকে।

রাসায়নিক সাম্যাবস্থাকে প্রভাবিত করে এমন কিছু কারণ হল:

  • তাপমাত্রা: সাধারণত, তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে সাম্যাবস্থা ডানদিকে সরে যায়।
  • চাপ: সাধারণত, চাপ বৃদ্ধি করলে সাম্যাবস্থা সেই দিকে সরে যায় যেখানে মোট গ্যাসের মোল সংখ্যা কমে যায়।
  • ঘনত্ব: সাধারণত, বিক্রিয়কের ঘনত্ব বৃদ্ধি করলে সাম্যাবস্থা ডানদিকে সরে যায়।
  • অনুঘটক: অনুঘটক সাম্যাবস্থার অবস্থানকে পরিবর্তন করে না, তবে সাম্যাবস্থায় পৌঁছানোর সময়কে কমিয়ে দেয়।

রাসায়নিক সাম্যাবস্থার ধারণাটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, শিল্পক্ষেত্রে বিভিন্ন পদার্থ উৎপাদনের জন্য রাসায়নিক সাম্যাবস্থার ধারণা ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও, জীববিজ্ঞানেও রাসায়নিক সাম্যাবস্থার ধারণা গুরুত্বপূর্ণ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url