ঘূর্ণিঝড় কাকে বলে? ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির কারণ

ঘূর্ণিঝড় কাকে বলে?

উচ্চ চাপের বায়ু ও জলীয় বাষ্পের মিশ্রণ নিম্নচাপের স্থলভাগ অঞ্চলে প্রবল গতিতে চক্রাকারে ঘূর্ণি সৃষ্টি করে, একেই ঘূর্ণিঝড় বলে। ঘূর্ণিঝড়কে সাইক্লোনও বলা হয়। এটি ৫০০ থেকে ৮০০ কিলােমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত হয়। 

অধিক গরমের ফলে ভারত সাগর ও বঙ্গোপসাগরের পানি ব্যাপক হারে বাষ্পে পরিণত হয়। এর ফলে ঐ সকল স্থানে সৃষ্ট নিম্নচাপ থেকেই তৈরি হয় ঘূর্ণিঝড়। ঘূর্ণিঝড়ের সময় দমকা হাওয়া বইতে থাকে ও মুষলধারে বৃষ্টি হতে থাকে। কখনাে কখনাে ঘূর্ণিঝড়ের ফলে জলােচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়।

ঘূর্ণিঝড়ের ফলে সৃষ্ট জলোচ্ছাসে লােকালয় প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়। মাঝে মাঝে জলোচ্ছ্বাসের ফলে সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে তীব্র জোয়ারের সৃষ্টি হয় এবং সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায়।

ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির কারণ

ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির মূল কারণ হলাে দুটি। একটি গভীর সমুদ্রের পানির উচ্চ তাপমাত্রা সৃষ্টি এবং অপরটি সমদ্রে নিম্নচাপ সৃষ্টি। সাধারণত ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে হলে সাগরের পানির তাপমাত্রা 27°C বা 80°F এর বেশি হতে হয়। আর বঙ্গোপসাগরে বছরের প্রায় সময় এ তাপমাত্রা থাকে।

গভীর সাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হলে আশেপাশের ভারী বাতাস সেদিকে প্রবল বেগে ধাবিত হয় এবং বাড়তি তাপমাত্রায় উত্তপ্ত হয়। তখন অক্ষ বরাবর পৃথিবীর ঘূর্ণন গতির প্রভাবে উত্তপ্ত বায়ু ঘুরতে ঘুরতে উপরের দিকে উঠতে থাকে। তখন ওপরের বাতাসে তাপমাত্রা কম এবং জলীয় বাষ্পের ঘনত্ব বেশি থাকায় তা ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়। 

বৃষ্টিপাতের ফলে জলীয় বাষ্প থেকে সুপ্ততাপ ছেড়ে দেয়, যা বাষ্পীভবন বাড়িয়ে দেয়। আবার এ সুপ্ত তাপের প্রভাবে সমুদ্রের বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রাও বেড়ে যায়। ফলে বিশাল এলাকা জুড়ে বায়ুমণ্ডলের চাপ ও তাপমাত্রার অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি হয়।

তখন নিম্নচাপটি কেন্দ্রমুখী হয় এবং চারদিকে থেকে ধেয়ে আসা বায়ু চক্রাকারে আবর্তিত হতে থাকে। এ অবস্থাটি হলাে ঘূর্ণিঝড়। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে সমুদ্রের পানি বিশাল ঢেউ তৈরি করে। এ ঢেউ যতই সমুদ্রের তীরের কাছাকাছি আসে এ সব ঢেউ আরও দীর্ঘ হয়ে ভয়ংকর জলােচ্ছ্বাসে রূপ নেয়।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url