কর্মমুখী রসায়ন | HSC রসায়ন প্রথম পত্র Notes

রসায়ন প্রথম পত্র নোট
কর্মমুখী রসায়ন নোট

শিখনফল-

১) খাদ্য নিরাপত্তার রসায়নের গুরুত্ব মূল্যায়ন করতে পারবো।

২) অনুমোদিত প্রিজারভেটিস্ এর খাদ্য সংরক্ষণ কৌশল ব্যাখ্যা করতে পারবো।

৩) খাদ্য কৌটাজাতকরণের মূলনীতি ব্যাখ্যা করতে পারবো।

৪) খাদ্য কৌটাজাতকরণ প্রণালী বর্ণনা করতে পারবো।

৫) সাসপেনশন ও কোয়াগুলেশন ব্যাখ্যা করতে পারবো।

৬) দুধের শতকরা সংযুক্তি বর্ণনা করতে পারবো।

৭) দুধ থেকে মাখন পৃথীকরণ ব্যাখ্যা করতে পারবো।

৮) মাখন পানিযুক্ত করে সংরক্ষণ ব্যাখ্যা করতে পারবো।

৯) মাখন থেকে ঘি এর উৎপাদন বর্ণনা করতে পারবো।

১০) গ্লাস ক্লিনার ও টয়লেট ক্লিনারের পরিষ্কারকরণ কৌশল ব্যাখ্যা করতে পারবো।

বিস্তারিত আলোচনা

খাদ্য নিরাপত্তা ও রসায়ন | Food Security and Chemistry

খাদ্য কাকে বলে?

যেসব পুষ্টিকর উপাদান প্রাণী ভক্ষণ করে বা পান করে এবং উদ্ভিদ শোষণ করে তাদের জীবন রক্ষা করে ও দেহের বৃদ্ধি ঘটায় তাকে খাদ্য বলা হয়।

খাদ্য নিরাপত্তা কাকে বলে?

উৎপাদন থেকে শুরু করে খাদ্য গ্রহণ পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে আমাদের খাদ্যকে জীবাণু ও দূষণ মুক্ত রাখা বা স্বাস্থ্য হানির বিভিন্ন কারণগুলো থেকে মুক্ত রাখার বিষয়ই হলো খাদ্য নিরাপত্তা।

খাদ্য নিরাপত্তার জন্য WHO এর দিক নির্দেশনা

দূষণমুক্ত খাদ্যঃ মানুষ ও পোষা প্রাণীর মাধ্যমে প্যাথোজেন দ্বারা খাদ্য দূষণ প্রতিহত করতে হবে।

কাচা ও রান্না খাদ্য পৃথক রাখাঃ রান্না খাবার দূষণমুক্ত রাখার উদ্দেশ্যে কাঁচা শাক-সবজিকে তা থেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে।

যথাযথ রান্নাঃ পর্যাপ্ত সময়ের জন্য ও সঠিক তাপমাত্রায় খাদ্য ফুটিয়ে রান্না করতে হবে যাতে প্যাথোজেন অণুজীব ধ্বংস হয়।

খাদ্য সংরক্ষণঃ উপযুক্ত তাপমাত্রায় খাদ্য সংরক্ষণ করতে হয় যাতে কোন অণুজীব জন্মাতে বা বেঁচে থাকতে না পারে।

নিরাপদ পানিঃ ধৌতকরণ ও খাদ্য প্রস্তুতের জন্য জীবাণুমুক্ত ও নিরাপদ পানির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

খাদ্য নিরাপত্তায় রসায়নের গুরুত্ব (Importance of Chemistry on Food Security)

খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রসায়নের গুরুত্ব অপরিসীম। রসায়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে খাদ্যের নিরাপদ মজুদে, গুণগতমান রক্ষায় ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যবস্তু ভোক্তা পর্যন্ত সঠিকভাবে পৌঁছাতে। খাদ্যবস্তুকে অণুজীবের আক্রমণ থেকে সুরক্ষায় এবং খাদ্য সামগ্রীর পুষ্টিমান বিশ্লেষণে রসায়নের গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োগ রয়েছে।

খাদ্য নিরাপত্তায় রসায়নের গুরুত্ব নিম্নের উল্লেখ করা হলো-

১) খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে রোগমুক্ত উন্নতমানের সতেজ বীজ সংরক্ষণ করতে রাসায়নিক যৌগ সিলিকা জেলের মধ্যে ছিদ্রযুক্ত প্যাকেটে রাখা হয়।

২) শস্য উৎপাদন, পোকামাকড় থেকে ফসলের সুরক্ষা, খাদ্যদ্রব্যের সংরক্ষণ প্রভৃতি খাদ্যনিরাপত্তার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে রসায়নের প্রয়োগ। মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি, শস্য ব্যবস্থাপনা, উদ্ভিদের পুষ্টি, পরিমিত পরিমাণে সার ও কীটনাশক প্রয়োগে মৃত্তিকা রসায়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

খাদ্য নিরাপত্তা ও রসায়নের মধ্যে সম্পর্ক কী?

খাদ্য বস্তুর স্থায়িত্ব বৃদ্ধি, স্বাদ, গন্ধ ইত্যাদি সংরক্ষণে রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার রয়েছে। আবার খামারে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যবস্তুর রোগ সংক্রমণ প্রতিরোধেও রসায়নের ভূমিকা রয়েছে। এমন কি সংক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য যে কৌটাজাতকরণ, তা প্রস্তুতিতে রসায়নের প্রয়োগ উল্লেখযোগ্য। তাই খাদ্য নিরাপত্তায় রসায়নের ভূমিকা অত্যাধিক।

খাদ্য নিরাপত্তায় কি কি কৌশল অবলম্বন করতে হয়?

খাদ্য নিরাপত্তায় কৌশল দুটি হলো -

১) উৎপাদন স্থল হতে বাজার পর্যন্ত নিরাপত্তা কৌশল।

২) বাজার হতে ভোক্তা পর্যন্ত নিরাপত্তা কৌশল।

খাদ্য নিরাপত্তা কৌশলগুলো মূলত কী কী কাজ করে?

খাদ্য নিরাপত্তা কৌশল দুটি ধাপে বিভক্ত। এ কৌশলগুলো মূলত খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও মজুদ প্রক্রিয়াতে মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, স্বাস্থ্যসতর্কতা, প্রিজারভেটিভস এর তথ্য, সত্যায়িতকরণ তথ্য ইত্যাদি সঠিকভাবে অনুসরণের নির্দেশিকা হিসেবে কাজ করে।

খাদ্য নিরাপত্তায় রসায়নের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।

খাদ্যের নিরাপত্তা, মজুদ এবং গুণগতমান রক্ষায় ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যবস্তু ভোক্তা পর্যন্ত পৌছাতে রসায়নের গুরুত্ব এক কথায় অনবদ্য। প্যাকেটজাত খাদ্যবস্তুর স্থায়িত্ব বাড়ানো বা খাদ্যবস্তুতে অণুজীবঘটিত সংক্রমণ প্রতিরোধে রাসায়নিক বিশ্লেষণ ও প্রয়োগ দুটোই অপরিহার্য। সর্বোপরি খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খাদ্য বস্তুতে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, টক্সিন (যা অণুজীব দ্বারা সৃষ্ট), তার প্রতিরোধ ও বিশ্লেষণ অপরিহার্য এবং এতে রসায়নের ধারণা বা প্রয়োগ অত্যাবশ্যকীয়।

খাদ্য বাজারজাতকরণে প্রিজারভেটিভস ব্যবহার করা হয় কেন?

বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে উৎপাদিত খাদ্যসমূহ কোন না কোন প্রিজারভেটিভস দ্বারা সংরক্ষিত থাকে। কঠিন, তরল, অর্ধতরল সকল বাণিজ্যিক খাদ্য প্রিজারভেটিভস দিয়ে প্রস্তুত করে বাজারজাতকরণ করা হয়। কারণ প্রিজারভেটিভস ব্যবহার না করলে খাদ্যের আয়ুষ্কাল খুব বেশি হয় না। অল্প সময়ের মধ্যে খাদ্য নষ্ট হয়ে যায়। আর সে কারণেই খাদ্য বাজারজাতকরণে প্রিজারভেটিভস ব্যবহার করা হয়।

খাদ্য সংরক্ষণে চিনি ও লবণ কীভাবে ব্যবহার করা হয়?

চিনি ও লবণ উভয়ই অণুজীবের উপর বিরূপ প্রভাব বিস্তার করে থাকে। খাদ্য সংরক্ষণে 15% বা তার বেশি লবণ ব্যবহার করা হয়। অপরদিকে চিনির ঘনত্ব যত বেশি হবে খাদ্য সংরক্ষক হিসেবে এটি তত বেশি কার্যকর হবে। জ্যাম, জেলিতে চিনির ঘনমাত্রা 65-70%। চিনি এবং লবণ এরা উভয়ই খাদ্যের পানিকে দ্রবণে পরিণত করে। ফলে অণুজীব, মুক্ত পানি পায় না বলে বংশ বিস্তার করতে পারে না এবং ব্যাপনের কারণে অণুজীবের দেহের প্রাচীর ধ্বংস প্রাপ্ত হয় বলে অণুজীব বাঁচতে পারে না।

খাদ্য সংরক্ষণে জৈব এসিড ও তার লবণের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।

জৈব এসিড যেমন - সাইট্রিক এসিড, প্রোপানয়িক এসিড, ল্যাকটিক এসিড এবং তাদের লবণ বাহির থেকে যোগ করা হয় অথবা খাদ্যের ভিতরে উৎপন্ন হয়। ফলের ঘ্রাণ ও সংরক্ষণের জন্য সিরাপ, ড্রিংক, জ্যাম ও জেলিতে সাইট্রিক এসিড যোগ করা হয়। বিভিন্ন ধরনের লবণ, দ্রবণে উৎপাদিত খাদ্য বা আচার তৈরিতে ল্যাকটিক এসিড ও এসিটিক এসিড ব্যবহার করা হয়।

কিউরিং পদ্ধতির সুবিধাসমূহ কি কি?

কিউরিং পদ্ধতির সুবিধাসমূহ হচ্ছে-

১) কিউরিং করে ফল, মাছ, মাংস ও শাকসবজি সংরক্ষণ করে সারা বছর সুষম খাদ্যের ব্যবস্থা করা যায়।

২) এ পদ্ধতিতে খাদ্য সামগ্রীর অপচয় রোধ হয়।

৩) এ পদ্ধতিতে ইন্ডাস্ট্রিতে সারা বছর কাঁচামাল সংরক্ষণ করা যায়।

খাদ্য কৌটাজাতকরণে ব্লাঞ্চিং করা হয় কেন?

ক্যানিং এর জন্য খাদ্য সামগ্রীর ব্লাঞ্চিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফুটন্ত পানি বা সদ্য প্রস্তুত বাষ্পে খাদ্যকে 5 - 10 মিনিট উত্তপ্ত করা হয়। পাকা ফলের ক্ষেত্রে এ প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হয় না। এর ফলে খাদ্য সামগ্রী আয়তনে কমে যায় এবং ক্যানে সাজানো সহজ ও সুষম হয়। খাদ্যে অসহনীয় ও অগ্রহণীয় ঘ্রাণ থাকলে তাও দূর হয়। শাকসবজিতে পিচ্ছিল পদার্থ থাকলে দূর হয়। কোনো কোনো খাদ্যের বর্ণ উন্নত হয়। কিছু অণুজীব মরে যায় এবং এনজাইম পুরোপুরি ধ্বংস প্রাপ্ত হয়। ব্লাঞ্চিং এ রান্নার কাজ কিছুটা সুসম্পন্ন হয়। তাই ব্লাঞ্চিং করা হয়।

খাদ্য কৌটাজাতকরণে এগজসটিং কেন করা হয়?

সিলিং এর আগে খাদ্যে বিশেষ প্রক্রিয়ায় তাপ দেওয়া হয়। এর ফলে পাত্রের ভেতরের সব বায়ু দূর হয় এবং বায়বীয় অণুজীব জন্মাতে বা বংশ বিস্তার করতে পারে না। এ অবস্থায় ক্যান সিল করে শীতল করলে ক্যানের ভেতরের বাষ্প তরল হয়ে খাদ্যে মিশে যায় এবং বায়ুশূন্যেতার সৃষ্টি হয়। আর এ বায়ুশূন্যতার কারণে ভেতরে কোনো বায়বীয় অণুজীব জন্মাতে পারে না বা বংশ বিস্তার করতে পারে না। অর্থাৎ খাদ্যকে অণুজীবের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্যই এগজসটিং করা হয়।

বায়ু নিরোধ কী কৌটাজাতকরণের প্রধান উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা কর।

বায়ু হল খাদ্যদ্রব্য পঁচনের অন্যতম সহায়ক। কারণ, O2 এর উপস্থিতিতে শ্বসন প্রক্রিয়া সংঘটিত হয় এবং O2 এর প্রতুলতা খাদ্যবস্তুতে কিছু কিছু অণুজীবের জৈবিক ক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। আবার কৌটাজাতকরণের মাধ্যমে ধুলোবালি হতে খাদ্যবস্তুকে নিরাপদ রাখা যায়, সহজেই পরিবহন বা মজুদ করা যায়। এমনকি উন্নত বিশ্বে খাদ্যবস্তুতে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদান এবং মেয়াদ সম্পর্কে ধারণা দেওয়াও কৌটাজাতকরণের অন্যতম উদ্দেশ্য। তাই বায়ু নিরোধ কৌটাজাতকরণের প্রধান উদ্দেশ্য নয়। তবে অন্যতম প্রধান হতে পারে।

ফলের অপচয় কীভাবে রোধ করা যায়?

ফল সাধারণত পঁচনশীল হয়। যা বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায় না। এ কারণে ফলের অপচয় হয়। এ অপচয় রোধ করার জন্য ফলের কৌটাজাতকরণ প্রণালী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ফলের কৌটাজাতকরণে ফল অনেকদিন সংরক্ষণ করে সুবিধামত ব্যবহার করা যায়। এর ফলে ফলের অপচয় রোধ হবে।

বাঁশকোরলের উপকারিতা কী কী?

এটি রুচি বাড়ায় ও হজমে সাহায্য করে। ক্যান্সার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। রক্তচাপ ও রক্তের কোলেস্টরল কমায়।

মাছের কৌটাজাতকরণের প্রয়োজনীয়তা লিখ।

মাছ পঁচনশীল হওয়ায় এর সংরক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ। সারা পৃথিবীতে মাছের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমাদের দেশও মাছ বিদেশে রপ্তানি করে। কিন্তু মাছের সঠিক সংরক্ষণের অভাবে প্রতিনিয়ত বিপুল পরিমাণ মাছ অপচয় হচ্ছে এবং নষ্ট হচ্ছে। আমাদের দেশে সঠিক কারিগরি জ্ঞান ও সচেতনতা না থাকায় আমরা মাছের পুষ্টি সুষমভাবে জাতীয় জীবনে কাজে লাগাতে পারি না। তাই মাছের কৌটাজাতকরণ একান্তই প্রয়োজনীয়।

মাছ সংরক্ষণে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত কেন?

সারা পৃথিবীতে মাছের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ ব্যাপক চাহিদা সম্পন্ন অতিপ্রয়োজনীয় খাদ্যে কিছু অসাদু মৎস্য ব্যবসায়ীগণ ফরমালিন নামক বিষ মিশিয়ে সংরক্ষণ ও বাজারজাত করছে। এটি স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এবং আইনের চোখে দণ্ডনীয় অপরাধ। এভাবে মাছ সংরক্ষণে বিষাক্ত ফরমালিন অসচেতনভাবে ব্যবহার করলে তার ক্ষতিকর প্রভাব এক সময় জাতির উপর বর্তাবে। তাই ফরমালিনের অভিশাপ থেকে জাতিকে রক্ষা করতে তথা মাছ সংরক্ষণে আমাদের সকলের সচেতন হওয়া উচিত।

পুষ্টি হিসেবে মাছের গুরুত্ব আলোচনা কর।

অধিকাংশ মাছে প্রোটিন 14-20%, চর্বি 0.2-20%, খনিজ লবণ 1-1.8% থাকে। মাছের প্রোটিন উচ্চমান সম্পন্ন ও সহজে হজমযোগ্য। মাছের চর্বিতে প্রচুর অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড বিদ্যমান যা খুব সহজেই সব বয়সের মানুষ হজম করতে পারে। মাছে পর্যাপ্ত ভিটামিন বিদ্যমান। মাছের চর্বি ভিটামিন এ এবং ডি এর ভাল উৎস। মাছের দেহ ভিটামিন বি এর উৎস হিসেবে কাজ করে। খনিজ লবণ হিসেবে আয়োডাইড লবণ রয়েছে। হাড়সহ ক্যানিং করা মাছ ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের জন্য উৎকৃষ্ট উৎস।

জলপাই এর আচর পাত্রে চেপে ভরতে হয় কেন?

জলপাই এর আচার পাত্রে এমনভাবে ভরতে হবে যেন কঠিন অংশগুলো পাত্রের নিচে চেপে থাকে এবং পাত্রের উপরে তরল অংশ থাকে। পাত্রের ভেতরে যাতে কোন ফাঁকা না থাকে সেজন্য চেপে ভরতে হয়। এর ফলে আচারে লুকিয়ে থাকা বাতাসের অণুগুলো বের হয়ে যাবে এবং সংরক্ষিত খাদ্য দ্রব্য দীর্ঘস্থায়ী হয়।

কোয়াগুলেশন প্রক্রিয়াটি কেন ব্যবহার করা হয়?

কলকারখানার বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য শোধন ছাড়া পানিতে ফেলা হচ্ছে। ফলে পানি দূষিত হচ্ছে এবং এ পানি পান করারও ব্যবহারের অযোগ্য হচ্ছে। এর ফলে প্রতিনিয়ত পানির অপচয় ঘটছে। কোয়াগুলেশন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার সাহায্যে কোনো দ্রবণে উপস্থিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণাকে উপযুক্ত রাসায়নিক পদার্থ যোগ করে অপেক্ষাকৃত বড় কণায় রূপান্তরিত করে দ্রবণ থেকে আলাদা করা যায়। এ প্রক্রিয়ায় দূষিত পানি শোধন করে ব্যবহারের উপযোগী করা সম্ভব। অর্থাৎ দূষিত পানি থেকে দূষক পদার্থ সফলভাবে আলাদা করে ব্যবহারের উপযোগী করতেই কোয়াগুলেশন প্রক্রিয়াটি ব্যবহার করা হয়।

খাদ্য হিসেবে দুধের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।

দুধ একটি সুষম খাদ্য যা তরল। ফলে শিশুর জন্য ইহা একটি উত্তম খাবার যা শিশু খাদ্যের সকল পুষ্টি উপাদান এখান থেকে পেয়ে থাকে। এমনকি মায়ের দুধ সঠিক মাত্রায় পেলে শিশুর বাড়তি খাবারের প্রয়োজন হয় না। এ ছাড়াও গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদির দুধও সকল পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে। যা আমাদের পুষ্টির চাহিদা পূরণে অত্যন্ত কার্যকরী।

খনিজ লবণ হিসেবে দুধের গুরুত্ব বেশি কেন?

দুধ গুরুত্বপূর্ণ খনিজ লবণ বহন করে যেমনঃ ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ফ্লোরাইড প্রভৃতি। ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস দৈহিক বৃদ্ধি, দাঁত ও হাঁড়ের ক্ষয় পূরণ করে। দুধে অন্যান্য খনিজ লবণও অল্প পরিমাণে বিদ্যমান। এছাড়া তরল দুধ হতে পাউডার দুধ উৎপাদন করা হয়। তাই খনিজ লবণ হিসেবে দুধের গুরুত্ব বেশি।

কীভাবে দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ করা যায়?

দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণের বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। এদের মধ্যে একটি পদ্ধতি হল অণুজীব নিম্নমানের pH সহ্য করতে পারে না, এতে অণুজীব ধ্বংস হয় বা অণুজীবের বংশবৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ হয়। দুধের ল্যাক্টোজ ফারমেন্টেশন প্রক্রিয়ায় ল্যাকটিক এসিডে পরিণত হয় এবং pH এর মান কমে যায়। এর ফলে ক্ষতিকর অণুজীব অনেকাংশে ধ্বংস হয়ে যায়।

তরল দুধ গুঁড়া দুধের চেয়ে ভাল কেন?

তরল দুধ এবং তা হতে উৎপন্ন গুঁড়া দুধ অনেকটাই ভিন্ন। এক কাপ তরল দুধে 149 ক্যালরি শক্তি থাকে। আর এক কাপ গুঁড়া দুধে থাকে 82 ক্যালরি। এক কাপ তরল দুধে ক্যালসিয়াম থাকে 291 মিলিগ্রাম, যেখানে গুঁড়া দুধে থাকে 283 মিলিগ্রাম। এক কাপ তরল দুধে চর্বি থাকে 7.7 g সেখানে গুঁড়া দুধে থাকে 0.5 g। তাই তরল দুধ গুঁড়া দুধের চেয়ে ভালো।

গ্রাভিটি দ্বারা ক্রীম প্রস্তুত করা যায় কীভাবে?

এ প্রণালীতে ফ্রেশ দুধ কয়েক ঘণ্টা রেখে দিলে দুধের উপর সর পরে। এ সরে 20 - 22% ফ্যাট থাকায় দুধ অপেক্ষা এর আপেক্ষিক গুরুত্ব কম থাকায় উপরে ভাসতে থাকে। উপর থেকে সর সংগ্রহ করা হয়।

ক্রীম থেকে কীভাবে মাখন প্রস্তুত করা যায়?

মাখন তৈরির জন্যে ক্রীমকে প্রথমে পাকাতে হয়। অবাঞ্চিত অণুজীব ধ্বংস করতে ক্রীমকে পাস্তুরিত করা হয়। পাস্তুরিত করার সময় ক্রীমকে 180-190℉ তাপমাত্রায় গরম করা হয়। এর ফলে মাখনের আয়ুষ্কাল বাড়ে। উত্তপ্ত ক্রীমকে শীতল করে খুব ভালো করে নাড়াতে হয়, একে বাটার নিডিং বলে। এভাবে ক্রীম থেকে মাখন প্রস্তুত করা যায়।

মাখনে চর্বিগুলো একত্রিত হতে পারে না কেন?

দুধে মূলত দুটি অংশ থাকে মাখন চর্বি ও গ্লোবিউলস বা প্রোটিন। গ্লোবিউলসমূহ ফসফোলিপিড জাতীয় পাতলা পর্দা দ্বারা ঘিরে থাকে এবং এ কারণেই  মাখনে চর্বিগুলো একত্রিত হতে পারে না।

মাখন হতে আলাদাকৃত পানি কী পানযোগ্য?

মাখন তৈরির পর তাতে যে পানি বা জলীয় অংশ থাকে তাতে মূলত দুধ প্রোটিন, ল্যাকটোজ ও লবণের আয়ন উপস্থিত থাকে। পানি আলাদা করলে মাখন পানির পানির পরিমাণ থাকে ১৬% এর মত। অর্থাৎ ঐ পানিতে মূলত দুধ চর্বি ছাড়া দুধের অন্য সবগুণাগুণই থাকবে। তাই মাখন হতে আলাদাকৃত পানি পানযোগ্য ও পুষ্টিকর।

মাখনকে পানি মুক্ত করা জরুরী কেন?

মাখনকে তরতাজা করার জন্য তাতে ১৬ শতাংশের মত পানি বজায় রাখা যায়। মাখন পানির সাথে দ্রবীভূত থাকে কিছু দুধ, প্রোটিন এবং ল্যাকটোজ যা মাখনকে পঁচনশীল করে এর স্থায়িত্ব কমিয়ে ফেলে। তাই মাখনকে পানি মুক্ত করা আবশ্যক।

ফ্রেশ বাটার সংরক্ষণ করা কঠিন কেন?

ফ্রেশ বাটারে পানির পরিমাণ থাকে শতকরা ১৬ ভাগ। এর ফলে এটি দ্রুত জারিত হয়ে বাজে গন্ধ সৃষ্টি করে বিশেষ করে উষ্ণ আবহওয়ায়। তাই ফ্রেশ বাটার সংরক্ষণ করা কঠিন।

মাখন ও ঘি এদের কোনটিকে নিম্ন তাপমাত্রায় রাখা জরুরী নয়?

মাখনে লবণের জলীয় দ্রবণ এবং চর্বি থাকে। তাই অণুজীবের সংক্রমণ রোধের জন্য মাখনকে ফ্রিজে রাখা জরুরী। অন্যদিকে, ঘি হলো পানি বিহীন চর্বি যা মাখন এ উপস্থিত চর্বি হতে অনেক পরিশোধিত। ফলে এটি স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেই সংক্রমণ করা যায়, নিম্ন তাপমাত্রায় রাখা জরুরী নয়।

ঘি কী ধরনের পাত্রে সংরক্ষণ করা উচিত?

ঘি অবশ্যই টিনের কৌটায় সংরক্ষণ করতে হবে। টিনের পাত্রটি হিমায়ক দ্বারা প্রলেপকৃত হতে হবে। লোহা বা তামার পাত্র ব্যবহার করা যাবে না। সূর্যালোক হতে ঘি দূরে রাখতে হবে।

উচ্চ তাপমাত্রায় রান্নার জন্য মাখনের চেয়ে ঘি অধিকতর সুবিধাজনক কেন?

মাখন এর Smok point 350℉ অর্থাৎ এই তাপমাত্রায় মাখন এর অণুগুলো ভেঙ্গে যায়। ফলে পরবর্তীতে আরও তাপে এর পুষ্টি উপাদান হ্রাস পায়। অপরদিকে ঘি এর Smoke point 450℉ - 475℉ অর্থাৎ এই তাপমাত্রায় ঘি বিভাজিত হয়। ফলে পরবর্তীতে আর বেশি তাপের প্রয়োজন হয় না এবং ঘি এর পুষ্টি উপাদান স্বাভাবিক থাকে। তাই উচ্চ তাপমাত্রায় রান্নার জন্য মাখনের চেয়ে ঘি অধিকতর সুবিধাজনক।

গোলাপজল কী কাজে ব্যবহার করা হয়?

গোলাপজল দুই ধরনের মানুষের অভিপ্রায় সিদ্ধ করে। সৌখিন ব্যক্তিরা বিলাসীতার জন্য ব্যবহার করে। অপরদিকে রোগীরা মাথার যন্ত্রণা বা অন্য কোন পীড়া বা অসুস্থ হলে তাদের যন্ত্রণা লাঘব অর্থে ব্যবহার করে।

হেয়ার অয়েল মানুষের সৌন্দর্য বর্ধনে সহায়ক ব্যাখ্যা কর।

চুল মানুষের সৌন্দর্যের প্রতীক। চুলের যত্নের প্রধান উপকরণ হলো হেয়ার অয়েল। চুলের যত্নে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় নারিকেল তেল ও কেশ তেল। বিশেষ করে মেয়েদের চুলের সৌন্দর্য বর্ধনে হেয়ার অয়েল বেশ সহায়ক যা তার সামগ্রিক সৌন্দর্যকে আরও বৃদ্ধি করে। বর্তমানে বিভিন্ন হেয়ার অয়েল রয়েছে যা চুলকে বিভিন্ন ডিজাইনে রূপান্তরিত করতে পারে।

ট্যালকের প্রকৃতি ব্যাখ্যা কর।

ম্যাগনেসিয়াম সিলিকেটকে ট্যালক বলে। এর সংকেত Mg3Si4O10(OH)2। এটি প্রকৃতিতে সবচেয়ে নরম খনিজ কঠিন পদার্থ। একে নখ দিয়ে আঘাত করে ভাঙা যায়, ছুঁরি দিয়ে কাটাও যায়। এর আপেক্ষিক গুরুত্ব 2.5 - 2.8। এটি খনিজ এসিডে সামান্য দ্রবণীয়।

ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে কোল্ড ক্রীমের ভূমিকা কী?

কোল্ড ক্রীম মূলত ত্বককে নরম ও মসৃণ রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়। মুখের ত্বকে ক্ষত হলে এ ক্রীম ভাল ফলাফল দেয়। ক্ষত নিরাময়ে এ ক্রীম গরমে ভাল কাজ করে। ধারণা করা হয় এর ব্যবহারে ত্বকে বিশেষ একটা শীতল অনুভূতির সৃষ্টি হয়। এ ক্রীমে বোরাক্স ব্যবহার করা হয় যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।

কীভাবে লিপস্টিকের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করা যায়?

ঠোঁট রাঙানোর জন্য মহিলারা লিপস্টিক ব্যবহার করে। তবে এর স্থায়িত্ব বৃদ্ধিতে আজকাল তারা খুবই সচেতন। সিলিকন তেল লিপস্টিকের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করে। এটি মূলত কালারকে ঠোঁটে সিল করে দেয় যেন সহজে মুছে না যায়।

পারফিউম তৈরিতে Like dissolves like নীতি অনুসরণ করা হয় কেন?

পারফিউমে যে সুগন্ধি ব্যবহার করা হয় তা মূলত বিভিন্ন জৈব উৎস জাত। এসব সুগন্ধি আসলে প্রকৃতিগতভাবে অপোলার এবং অ্যারোমেটিক। পারফিউম তৈরিতে এই অপোলার সুগন্ধিকে দ্রবীভূত করার জন্য অপোলার দ্রাবক হিসেবে অ্যালকোহল ব্যবহৃত হয়। তাই পারফিউম তৈরিতে Like dissolves like নীতি অনুসারে পোলার দ্রব পোলার দ্রাবকে এবং অপোলার দ্রব অপোলার দ্রাবকে দ্রবীভূত হবে।

লিপস্টিক দ্রুত ঠোঁটে ছড়িয়ে পড়ে কেন?

খনিজ তেল ব্যবহার করলে লিপস্টিকের স্থায়িত্ব বাড়ে। কিন্তু এর ব্যবহারে লিপস্টিক দ্রুত ঠোঁটে ছড়িয়ে পড়ে। কারণ খনিজ তেলের রঙকে মেশানোর ক্ষমতা নেই।

লিপস্টিক তৈরিতে ভেসলিন ব্যবহৃত হয় কেন?

ভেসলিন লিপস্টিকের স্থায়িত্ব বাড়ায় এবং এটি লিপস্টিকের চটচটে ভাবটা নিয়ে আসে। আবার যেখানে ক্যাষ্টর অয়েল কম ব্যবহৃত হয় সেখানে ভেসলিন ব্যবহার করা যেতে পারে। তাই লিপস্টিক তৈরিতে ভেসলিন ব্যবহৃত হয়।

বাজারে হেয়ার জেলের ক্ষতিকারক দিকগুলি কী কী?

বাজারে বিভিন্ন ব্রান্ডের হেয়ার জেল পাওয়া গেলেও তাতে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকারক কেমিক্যাল মিশানো হয়। এসব রাসায়নিক দ্রব্য মাথার ত্বক এবং চুল দুটোর জন্যই ক্ষতিকারক হতে পারে। অনেক সময় ক্ষতিকারক রং ব্যবহৃত হয় যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

গ্লাস ক্লিনার ব্যবহারের উপকারিতা কী?

গ্লাস ক্লিনার দ্বারা কোন ভারী ময়লা বা গ্রীজ পরিষ্কার করা হয় না। তবে এর ব্যবহারে কাঁচ আঁকাবাঁকা ডোরা বা দাগযুক্ত উজ্জ্বল্য লাভ করে। এমন কি এর ব্যবহারে ব্যবহার্য জিনিসপত্র বেশ দীর্ঘস্থায়ী হয়।

গ্লাস ক্লিনারের উপাদানসমূহ মিশ্রিতকরণে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয় কেন?

গ্লাস ক্লিনারের উপাদানসমূহের মধ্যে অ্যামোনিয়া অন্যতম। এটি খুবই বিষাক্ত। তাই নিঃশ্বাসের সাথে গ্রহণ বা শরীরের কোন অংশে লাগা খুবই বিপজ্জ্বনক। এ কারণে গ্লাস ক্লিনারের উপাদানসমূহ মিশানোর সময় কিংবা গ্লাস ক্লিনার স্প্রে করার সময় সতর্কতা হিসেবে মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস পরিধান করা হয়।

গ্লাস ক্লিনারে অ্যামোনিয়ার ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।

পানিতে অ্যামোনিয়া দ্রবণ ক্লিনার হিসেবে কাজ করে। অ্যামোনিয়া পানির সাথে বিক্রিয়ায় অ্যামোনিয়া দ্রবণ তৈরি করে। এটি তেল বা চর্বির সাথে বিক্রিয়ায় সাবান উৎপন্ন করে। অ্যামোনিয়া দ্রবণের পানি সাবনকে দ্রবীভূত করে যা কিনা সম্পৃক্ত বা তোয়ালে দ্বারা সহজেই সরানো যায়।

NaOH এর জলীয় দ্রবণ দিয়ে টয়লেট ক্লিনার তৈরি করা সম্ভব কী?

টয়লেটের ময়লা পরিষ্কারের জন্য মূলত শক্তিশালী ক্ষয়কারক পদার্থ দরকার। NaOH হলো ক্ষয়কারক পদার্থ। NaOH এর OH- মূলক খুব সহজে ময়লা ও জীবাণু ধ্বংস করতে পারে। তাই NaOH এর গাঢ় জলীয় দ্রবণ দিয়ে টয়লেট পরিষ্কারক তৈরি করা অবশ্যই সম্ভব।

টয়লেট ক্লিনার ব্যবহারের সময় কী ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত?

টয়লেট ক্লিনার দিয়ে কখনোই অন্য কিছু পরিষ্কার করা উচিত নয়। এটি ব্যবহারের সময় অবশ্যই বাথরুমের দরজা ও জানালা খোলা রাখতে হবে নতুবা মারাত্মক ধরনের শ্বাসজনিত সমস্যা হতে পারে। এটি ব্যবহারের সময় চোখে চশমা ও নাকে মাস্ক পড়ে নেয়া ভাল। কারণ চোখে জ্বালাপোড়া  গলার ভিতরে ফোস্কাও পড়তে পারে।

মল্টভিনেগার প্রস্তুতিতে গাঁজন প্রক্রিয়ার গুরুত্ব কী?

গাঁজন অর্থ পঁচানো। এই পরিস্থিতিতে ছত্রাকের উপস্থিতিতে শর্করা বা চিনি অ্যালকোহলে পরিণত হয়। শর্করাকে অ্যালকাইল হাইড্রোক্সাইড এ পরিণত করা হয়। শর্করাকে অ্যালকাইল হাইড্রোক্সাইড এ পরিণত করার জন্য গাঁজন প্রক্রিয়া অত্যাবশ্যকীয়। পরবর্তীতে এই অ্যালকোহলের জারণ প্রক্রিয়াতেই ভিনেগার পাওয়া যায়। তাই মল্ট হতে ভিনেগার প্রস্তুতে গাঁজন প্রক্রিয়া অত্যাবশ্যকীয়।

ইথানোয়িক এসিডকে গ্লেসিয়াল এসিটিক এসিড বলা হয় কেন?

99.5% ইথানোয়িক এসিডকে বিশুদ্ধ ইথানয়িক এসিড বলে। এ বিশুদ্ধ ইথানোয়িক এসিডকে 16.7°C তাপমাত্রায় শীতল করলে যদি তা জমে তুষারের ন্যায় সাদা আকার ধারণ করে তবে ঐ বিশুদ্ধ ইথানোয়িক এসিডকে গ্লেসিয়াল এসিটিক এসিড বলা হয়।

কোন ধরনের ভিনেগার উন্নতমানের এবং কেন?

প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত বিভিন্ন ফল ও শর্করা খাদ্য হতে উৎপাদিত ভিনেগার উন্নতমানের হয়। কারণ এ ধরনের ভিনেগারের নির্দিষ্ট রঙ ও সুগন্ধ থাকে। এতে বিভিন্ন পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ভিটামিন, মিনারেল ও জৈব যৌগ থাকে। এগুলো পরিমাণে কম হলেও খাদ্য সামগ্রীর স্বাদ, গন্ধ ও মান উন্নয়নে মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারে।

শাক সবজি সংরক্ষণে ভিনেগার ব্যবহৃত হয় কেন?

শাক সবজি দ্রুত পচনশীল। ভিনেগারে শাক সবজি সংরক্ষণ করলে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ব্যবহার করা যায় এবং এর বর্ণ, পুষ্টি, ভিটামিন অক্ষুণ্ন থাকে। ভিনেগার শাক সবজিতে বিদ্যমান ক্যালসিয়াম, লোহা, ফসফরাস প্রভৃতিকে মুক্ত করে শরীরে গ্রহণের উপযোগী করে তোলে। তাই শাক সবজি সংরক্ষণে ভিনাগার ব্যবহার করা হয়।

রোগ প্রতিরোধে ভিনেগারের ভূমিকা কী?

খাদ্যের সাথে সঠিক মাত্রায় ভিনেগার গ্রহণ করলে শারীরিক বহুমাত্রিক উপকার সাধিত হয়। এটি খাবারের রুচি আনে, রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয়, হজমশক্তি বাড়ায়, শরীরে সৃষ্ট তরল অপদ্রব্য নিঃসরণ সহজ করে দেয়, রক্তের অপ্রয়োজনীয় চর্বি বিদুরিত করে শরীরকে স্লিম রাখতে সাহায্যে করে। এটি রক্তচাপ ও রক্তের কোলেস্টেরলের পরিমাণ হ্রাস করে। ক্যান্সার ও টিউমার প্রতিরোধে সহায়ক এবং মাংসে সৃষ্ট নাইট্রোঅ্যামিন ধ্বংসে কার্যকর ভূমিকা রাখে।



রসায়ন প্রথম পত্র নোট


অধ্যায় - ১ : ল্যাবরেটরির নিরাপদ ব্যবহার | HSC রসায়ন প্রথম পত্র Notes

অধ্যায় - ২ : গুণগত রসায়ন | HSC রসায়ন প্রথম পত্র Notes

অধ্যায় - ৩ : মৌলের পর্যাবৃত্ত ধর্ম ও রাসায়নিক বন্ধন | HSC রসায়ন প্রথম পত্র Notes

অধ্যায় - ৪ : রাসায়নিক পরিবর্তন | HSC রসায়ন প্রথম পত্র Notes

অধ্যায় - ৫ : কর্মমুখী রসায়ন | HSC রসায়ন প্রথম পত্র Notes


রসায়ন দ্বিতীয় পত্র নোট

অধ্যায় - ১ : পরিবেশ রসায়ন | HSC রসায়ন দ্বিতীয় পত্র Notes

অধ্যায় - ২ : জৈব রসায়ন | HSC রসায়ন দ্বিতীয় পত্র Notes

অধ্যায় - ৩ : পরিমাণগত রসায়ন | HSC রসায়ন দ্বিতীয় পত্র Notes

অধ্যায় - ৪ : তড়িৎ রসায়ন | HSC রসায়ন দ্বিতীয় পত্র Notes

অধ্যায় - ৫ : অর্থনৈতিক রসায়ন | HSC রসায়ন দ্বিতীয় পত্র Notes

No Comment
Add Comment
comment url