পেশি টিস্যু কাকে বলে? পেশি টিস্যুর কাজ, পেশি টিস্যুর প্রকারভেদ

পেশি টিস্যু কাকে বলে?

ভ্রূণীয় মেসোডার্ম থেকে উৎপন্ন বিশেষ ধরনের টিস্যুকে বলা হয় পেশি টিস্যু। এরা সংকোচন এবং প্রসারণশীল টিস্যু। এদের মাতৃকা প্রায় অনুপস্থিত। পেশি কোষগুলো সরু, লম্বা ও তন্তুময়। তন্তুগুলো মাকু আকৃতির। এ ধরনের তন্তুকে মায়োফাইব্রিলও বলা হয়। পেশি কোষের সাইটোপ্লাজমে এক বা একাধিক নিউক্লিয়াস থাকে এদের কোষ পর্দাকে সারকোলেমা বলা হয়। আড়াআড়ি ডোরাযুক্ত মায়োফাইব্রিলকে বলা হয় ডোরাকাটা পেশি এবং ডোরাবিহীন মায়োফাইব্রিলকে বলা হয় মসৃণ পেশি।


বিভিন্ন প্রকার পেশি টিস্যু

পেশি টিস্যুর কাজ

পেশি কোষ সংকুচিত এবং প্রসারিত হয়ে অঙ্গ সঞ্চালন, চলন ও অভ্যন্তরীণ পরিবহনে অংশ নেয়।


পেশি টিস্যুর প্রকারভেদ

পেশি টিস্যু তিন প্রকারের হয়। যথা -

১) ঐচ্ছিক টিস্যু,

২) অনৈচ্ছিক টিস্যু এবং 

৩) হৃদপেশি।

১) ঐচ্ছিক পেশি

ঐচ্ছিক পেশি প্রাণীর ইচ্ছানুযায়ী সংকুচিত বা প্রসারিত হয়। এর কোষগুলো নলাকার, শাখাবিহীন এবং আড়াআড়ি ডোরাযুক্ত। এ পেশির কোষগুলোতে সাধারণত একাধিক নিউক্লিয়াস থাকে। এরা দ্রুত সংকুচিত এবং প্রসারিত হতে পারে। এ ধরনের পেশিকে ডোরা কাটা বা কঙ্কাল পেশিও বলা হয়। এরা অস্থি তন্ত্রে সংলগ্ন থাকে। যেমন : মানুষের হাড় এবং পায়ের পেশী সমূহ।

ঐচ্ছিক পেশির কাজ

এরা বিভিন্ন অস্থির ঐচ্ছিক নড়াচড়া নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে বিভিন্ন অঙ্গের সঞ্চালন এবং চলন নিয়ন্ত্রণ করে।

২) অনৈচ্ছিক পেশি

অনেক বেশি প্রাণীর ইচ্ছানুযায়ী সংকুচিত ও প্রসারিত হয় না। এরা মাকু আকৃতির। এদের গায়ে আড়াআড়ি দাগ থাকে না। এজন্য এধরনের পেশিকে মসৃণ পেশীও বলা হয়। এরা মেরুদন্ডী প্রাণীদের রক্তনালী এবং পৌষ্টিক নালীর প্রাচীরে থাকে।

অনৈচ্ছিক পেশির কাজ

এরা প্রধানতঃ দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গাদির সঞ্চালনে অংশ নেয়। যেমন অন্ত্রের ক্রমসংকোচন।

৩) হৃদপেশী

মেরুদন্ডী প্রাণীদের হৃদপিণ্ড এক ধরনের বিশেষ অনৈচ্ছিক পেশি দ্বারা গঠিত। এ বিশেষ ধরনের পেশিকে বলা হয় হৃদপেশি। এদের কোষগুলো নলাকৃতির, শাখান্বিত এবং আড়াআড়ি দাগযুক্ত। এ টিস্যুর কোষ গুলোর মধ্যে নিবেশিত ফলক থাকে। এদের সংকোচন-প্রসারণ প্রাণীর ইচ্ছাধীন নয়। অর্থাৎ হৃদপেশীর গঠন ঐচ্ছিক পেশির ন্যায়। এদের কোষগুলো শাখার সাহায্যে পরস্পর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত থাকে, এ পেশির কোন স্থানে স্পন্দন হলে মুহূর্তের মধ্যে তা সকল কোষে ছড়িয়ে পড়ে। হৃদপিন্ডের সকল হৃদপেশি একত্রে সমন্বিতভাবে সংকুচিত ও প্রসারিত হয়। এ পেশি কখনও ক্লান্ত হয় না এবং ক্রমাগত একটি নির্দিষ্ট ছন্দে সংকুচিত ও প্রসারিত হয়ে থাকে।

হৃদপেশির কাজ

এরা অনেকটা ছান্দিক গতিতে সংকুচিত ও প্রসারিত হয়ে দেহের মধ্যে রক্ত চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে।

আরো পড়ুনঃ

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url