ধাতু কাকে বলে? রসায়ন | ধাতু কাকে বলে? বাংলা | ক্ষার ধাতু কাকে বলে? | মুদ্রা ধাতু (Coinage metals) কাকে বলে?| সংযোগমূলক ধাতু কাকে বলে?| প্রযোজক ধাতু কাকে বলে? | মৌলিক ধাতু কাকে বলে?

ধাতু কাকে বলে?

ধাতু শব্দটি রসায়ন ও বাংলা ব্যাকরণে ব্যবহার করা হয়।

রসায়ন অনুযায়ী,

যেসব উপাদান সাধারণত তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবাহী, আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ হয়, পিটিয়ে পাত করা যায়, ঘষলে চকচক করে সেসব উপাদানকে ধাতু বলে ।

যেমন: আয়রন, কপার, সোডিয়াম ইত্যাদি ।


বাংলা ব্যাকরণ অনুযায়ী,

ক্রিয়া পদের মূল অংশকেই ধাতু বলে। অর্থাৎ ক্রিয়ার মূল অংশ যার মধ্য দিয়ে প্রকাশ পায় তাকেই ধাতু বলে।
যেমন - কর্ , চল, পড়, এগুলো ধাতুর উদাহরণ। এই ধাতুগুলোই পদে ব্যবহৃত হবার সময় প্রত্যয় বা বিভক্তি যুক্ত করা হয়।
যেমন - পড়ে, করে, ধরে, চলা, বলা। 
অন্যভাবে, বলা যায় ক্রিয়াপদের বিভক্তি বাদ দিলে যা থাকে সেই ধাতু। যেমন - 'পড়' ধাতুর সঙ্গে 'এ' বিভক্তি যুক্ত করে  'পড়ে' ক্রিয়া হয়েছে। অর্থাৎ 'পড়' ধাতু পড়ে ক্রিয়াপদের মুল অংশ।

লেখার সময় ধাতু বোঝাবার জন্য শব্দের পূর্বে √ চিহ্নটি ব্যবহৃত হয়।

অর্থাৎ 'ধাতু' না লিখে শব্দের আগে √ এই চিহ্নটি ব্যবহার করলেই বোঝা যায় এটি একটি ধাতু।

√কর, √পড়, √ধর, √খা, √দা ইত্যাদি।

ধাতু বা ক্রিয়ামূল চিনবার পদ্ধতি হলো বর্তমান কালের অনুজ্ঞাবাচক (আদেশ, নির্দেশ ইত্যাদি বাচক) পদে তুচ্ছার্থক মধ্যম পুরুষের ক্রিয়ার যে রূপ সেটাই ধাতু

ক্ষার ধাতু কাকে বলে?

যে সকল ধাতু পানির সঙ্গে সরাসরি বিক্রিয়া করে এবং তীব্র ক্ষার গঠন করে তাকে ক্ষার ধাতু বলে।

যেমন: সোডিয়াম (Na), পটাশিয়াম (K), লিথিয়াম (Li), ক্যালসিয়াম (Ca), আয়রন (Fe), জিংক (Zn), গোল্ড (Au), সিলভার (Ag) ইত্যাদি।

মুদ্রা ধাতু (Coinage metals) কাকে বলে?

পর্যায় সারণির গ্রুপ- 11 মৌল সমূহ কপার (Cu), সিলভার (Ag) , গোল্ড (Au) এদেরকে মুদ্রা ধাতু বলে।

প্রাচীনকালে এই ধাতু গুলির তৈরি মুদ্রা পণ্য ব্যবসা - বাণিজ্যে পণ্য বিনিময় কারক হিসেবে ব্যবহার করা হতো বলে এমন নাম করন করা হয়।

সংযোগমূলক ধাতু কাকে বলে?

বিশেষ্য, বিশেষণ বা ধ্বন্যাত্মক অব্যয়ের সঙ্গে, কর্, দে, পা, খা, ছাড় ইত্যাদি মৌলিক ধাতু সংযুক্ত হয়ে যে নতুন ধাতু গঠিত হয়, তা-ই সংযোগমূলক ধাতু। যেমন - যোগ (বিশেষ্য পদ) + কর্ (ধাতু) = 'যোগ কর' (সংযোগমূলক ধাতু)। 

কর্মবাচ্যের ধাতু কাকে বলে?

মৌলিক ধাতুর সঙ্গে 'আ' প্রত্যয় যোগে কর্মবাচ্যের ধাতু সাধিত হয়। এটি বাক্যমধ্যস্থ কর্মপদের অনুসারী ক্রিয়ার ধাতু। যথা - দেখ্ + আ = দেখা; কাজটি ভালো দেখায় না। হার্ + আ = হারা; যা কিছু হরায় গিন্নী বলেন, কেষ্টা বেটাই চোর।

প্রযোজক ধাতু কাকে বলে?

মৌলিক ধাতুর পরে প্রেরণার্থ (অপরকে নিয়োজিত করা অর্থে) 'আ' প্রত্যয় যোগ করে প্রযোজক ধাতু বা ণিজন্ত ধাতু গঠিত হয়। যেমন - কর্ + আ = করা (এখানে 'করা' একটি ধাতু)। 

যেমন - সে নিজে করে না, আর একজনকে দিয়ে করায়।
অনুরূপভাবে - পড় + আ = পড়া; তিনি ছেলেকে পড়াচ্ছেন।

নাম ধাতু কাকে বলে?

বিশেষ্য, বিশেষণ এবং অনুকার অব্যয়ের পরে 'আ' প্রত্যয় যোগ করে যে নতুন ধাতুটি গঠিত হয় তাই নাম ধাতু। যেমন - সে ঘুমাচ্ছে। 'ঘুম' থেকে নাম ধাতু 'ঘুমা'। 'ধমক্' থেকে নাম ধাতু 'ধমকা'।

যেমন - আমাকে ধমকিও না।

সাধিত ধাতু কাকে বলে?

মৌলিক ধাতু কিংবা কোনো কোনো নাম শব্দের সঙ্গে 'আ' প্রত্যয় যোগে যে ধাতু গঠিত হয়, তাকে সাধিত ধাতু বলে। যেমন - দেখ্ + আ = দেখা, পড় + আ = পড়া, বল + আ = বলা।

বিদেশাগত ধাতু কাকে বলে?

প্রধানত হিন্দি এবং ক্বচিৎ আরবি-ফারসি ভাষা থেকে যেসব ধাতু বা ক্রিয়ামূল বাংলা ভাষায় গৃহীত হয়েছে, সেগুলোকে বিদেশাগত ধাতু বা ক্রিয়ামূল বলা হয়। 
যেমন - ভিক্ষে মেগে খায়।

মৌলিক ধাতু কাকে বলে?

যেসব ধাতু বিশ্লেষণ করা সম্ভব নয়, সেগুলোই মৌলিক ধাতু। এগুলোকে সিদ্ধ বা স্বয়ংসিদ্ধ ধাতুও বলা হয়। যেমন - চল্, পড়, কর্, শো, হ, খা ইত্যাদি।

অপধাতু কাকে বলে?

যেসব মৌল ধাতু ও অধাতু উভয়ের বৈশিষ্ট্য বহন করে তাদেরকে অপধাতু বলা হয়। যেমন - সিলিকন, জার্মেনিয়াম, আর্সেনিক ইত্যাদি।

আরো পড়ুনঃ

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url