তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের ব্যবহার লিখ।

তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের ব্যবহার লিখ।

মানব জীবনে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের ব্যবহার ব্যাপক। চিকিৎসাক্ষেত্রে, কৃষিক্ষেত্রে, খাদ্য সংরক্ষণে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের ব্যবহার নিম্নে দেয়া হলো-

চিকিৎসাক্ষেত্রে ব্যবহার:
চিকিৎসাক্ষেত্রে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের দু'ধরণের ব্যবহার রয়েছে। কোনো রোগ বা রোগাক্রান্ত স্থান নির্ণয় করতে এবং রোগ নিরাময়ে। নিম্নে চিকিৎসাক্ষেত্রে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের ব্যবহার উল্লেখ করা হলো-
  • দেহের হাড় বেড়ে যাওয়া এবং কোথায়, কেন ব্যথা হচ্ছে তা নির্নয়ের জন্য Tc-99m ইঞ্জেকশন দিলে বেশ কিছু সময় পরে পর্দায় দেখা যায় হাড়ের কোথায় কী সমস্যা আছে। 99mTc থেকে রশ্মি নির্গত হওয়ার পর 99Tc আইসোটোপ উৎপন্ন হয়।
  • 153Sm অথবা 89Sr ব্যবহার করে হাড়ের ব্যথার চিকিৎসা করা হয়।
  • টিউমারের উপস্থিতি নির্ণয় ও তা নিরাময়ে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ব্যবহার করা হয়। নিরাময়ের জন্য 60Co থেকে নির্গত গামা রশ্মি নিক্ষেপ করে ক্যান্সার কোষকলাকে ধ্বংস করা হয়।
  • 131I থাইরয়েড গ্রন্থির কোষ-কলা বৃদ্ধি প্রতিহত করে।
  • রক্তের লিউকোমিয়া রোগের চিকিৎসায় 32P এর ফসফেট ব্যবহৃত হয়।
  • 238Pu হার্টে পেইসমেকার বসাতে ব্যবহার করা হয়।


কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহার:
তেজস্ক্রিয় রশ্মি ব্যবহার করে কৃষিক্ষেত্রে নতুন নতুন উন্নত মানে বীজ উদ্ভাবন করা হচ্ছে এবং এর মাধ্যমে ফলনের মানের উন্নতি ও পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে। তেজস্ক্রিয় 32যুক্ত ফসফেট দ্রবণ উদ্ভিদের মূলধারায় সূচিত করা হয়। গাইগার কাউন্টার ব্যবহার করে পুরো উদ্ভিদে এর চলাচল চিহ্নিত করে বিজ্ঞানীর কী কৌশলে ফসফরাস ব্যবহার করে তা জানতে পারেন।

খাদ্য সংরক্ষণে ব্যবহার:
সকল প্রকার শাক - সবজি, ফল সঠিক সংরক্ষণের অভাবে বা রান্না প্রক্রিয়া সঠিক না হলে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার জন্ম হয় যা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। ক্ষেত্রবিশেষে মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হতে পারে। সাধারণত 60Co থেকে যে গামা রশ্মি নির্গত হয় তা এসব ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে। পোলট্রি ফার্মেও এ রশ্মি ব্যবহার করা হয় যখন কোনো ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগের উদ্ভব ঘটে। একটি নির্দিষ্ট মাত্রার তেজস্ক্রিয় রশ্মি প্রয়োগ করে খাদ্য সংরক্ষণ করা হয়। অতিরিক্ত তেজস্ক্রিয় রশ্মি ব্যবহার করা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। খাদ্যদ্রব্য তেজস্ক্রিয় রশ্মি অবশ্যই পরিমিত মাত্রায় সংরক্ষিত স্থানে প্রয়োগ করতে হবে। পরিমিত মাত্রায় এ তেজস্ক্রিয় রশ্মি সূর্যের আলোর ন্যায় নিরাপদ।

বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার:

আইসোটোপসমূহ ক্ষয়ের সময় বা নিউক্লিয় বিক্রিয়ার সময় প্রচুর পরিমাণ তাপ উৎপন্ন করে। এই তাপশক্তিকে বিভিন্ন ডিভাইস ব্যবহার করে বিদ্যুৎশক্তিতে রূপান্তরিত করা হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পারমাণবিক চুল্লি থেকে প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয় নিউক্লিয় বিক্রিয়ার মাধ্যমে।


Related Post:

Next Post Previous Post
2 Comments
  • Unknown
    Unknown ১১ জুন, ২০২১ এ ১০:০৬ PM

    Veeery. Goood

  • Unknown
    Unknown ২৮ আগস্ট, ২০২১ এ ৫:২৬ PM

    অনেক উপকৃত হলাম ।

Add Comment
comment url