পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ কাকে বলে? তা জানার আগে আমরা আগে জেনে নিবো সূর্যগ্রহণ কি? কত ধরনের সূর্যগ্রহণ হতে পারে। যখন চাঁদ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করার সময় ঠিক সূর্য ও পৃথিবীর মাঝামাঝি এসে পড়ে তখন সেটি সূর্যের আলোকে পৃথিবীতে আসতে বাধা দেয় – অর্থাৎ চাঁদের ছায়া পৃথিবীর কিছু অংশের উপরে পড়ে। এ ঘটনাকে সূর্যগ্রহণ বলে। এ সময় সূর্য, চাঁদ ও পৃথিবী একই সরলরেখায় অবস্থান করে। সূর্যগ্রহণ বিভিন্ন রকম হতে পারে; যেমন: আংশিক, পূর্ণগ্রাস, বলয় এবং হাইব্রিড সূর্যগ্রহণ।
পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ (Total Solar Eclipse)
গ্রহণের সময় সূর্য যদি চাঁদের দ্বারা সম্পূর্ণ ঢেকে যায় তবে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ সংঘটিত হয়। আমরা জানি, চাঁদ পৃথিবীকে উপবৃত্তাকার পথে পরিভ্রমণ করে। ফলে কখনো কখনো চাঁদ পৃথিবীর কাছাকাছি অবস্থান করে (অনুভূ) তখন চাঁদকে তুলনামূলকভাবে বড়ো দেখা যায়। চাঁদ অনুভূ অবস্থানে থাকার সময় যদি সূর্যগ্রহণ হয় তবে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ হয়ে থাকে। এরকম সময়ে যে সকল স্থানে প্রচ্ছায়া পড়ে সেই সকল স্থান থেকে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা যায়। পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণের সময় সূর্যের চারপাশে তার করোনা দেখা যায়। শুধু এই সময়েই খালি চোখে সূর্যের করোনা দেখা সম্ভব হয় যেটি অন্য কখনো দেখার সৌভাগ্য হয় না।

প্রচ্ছায়া খুব সামান্য অংশ জুড়ে থাকে, আবার পৃথিবীও তার নিজ অক্ষে ঘুরতে থাকে। তার ফলে প্রচ্ছায়া একটি নির্দিষ্ট স্থানে স্থির থাকে না, এটি পৃথিবীপৃষ্ঠে একটি রেখাপথ (একে আমরা পূর্ণগ্রাস গ্রহণরেখা বলতে পারি) বরাবর সরতে থাকে। এই রেখাপথ ভূপৃষ্ঠের যে সকল স্থানে পড়ে সে সকল স্থানে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখতে পাওয়া যায়। পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের ঠিক শুরুর মুহূর্তে যখন পুরো সূর্যটা ঢেকে গিয়ে শুধ একটি ক্ষুদ্র অংশ ঢেকে যাওয়া বাকী থাকে এবং শেষ হওয়ার পরের মুহূর্তে যখন পুরোটা ঢেকে যাওয়ার পর ক্ষুদ্র একটা অংশ বের হয়ে আসে তখন সেই অংশে সূর্যের তীব্র আলো দৃশ্যমান হয় এবং সেটি দেখতে অনেকটা হীরার আংটির মতো দেখা যায় বলে তাকে ডায়মন্ড রিং বলে।